in ইতিহাস ও নিদর্শন by
সিকান্দার শাহ সম্পর্কে কিছু লিখ?

2 Answers

0 votes
by
 
Best answer
সিকান্দার শাহ বাংলার সুলতান রাজত্ব ১৩৫৮–১৩৯০ পূর্বসূরি শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ উত্তরসূরি গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ বংশধর শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ রাজবংশ ইলিয়াস শাহি রাজবংশ আবুল মুজাহিদ সিকান্দর শাহ [১](শাসনকাল ১৩৫৮-১৩৯০ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন বাংলার শাসক ইলিয়াস শাহি রাজবংশের দ্বিতীয় সুলতান। সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ তার পিতা। ১৩৫৮ সালে তিনি পান্ডুয়ার আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন। ফিরোজ শাহ তুঘলকের দ্বিতীয় অভিযান তার শাসনামলে দিল্লীর সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক বাংলা জয়ের জন্য অভিযান পরিচালনা করেন। সোনারগাঁওয়ের প্রাক্তন শাসক ফখরুদ্দিন মোবারক শাহর জামাতা পারস্য বংশোদ্ভূত ব্যক্তি জাফর খান ফারস বাংলা থেকে পালিয়ে দিল্লী পৌছান। ফিরোজ শাহ তাকে বাংলার ন্যায়সঙ্গত শাসক বলে ঘোষণা করেন। তার প্ররোচণায় ১৩৫৯ সালে সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক ৮০,০০০ অশ্বারোহী, ৪৭০ হস্তী ও বড় আকারের পদাতিক বাহিনীর বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত সেনাবাহিনীকে ব্যক্তিগতভাবে নেতৃত্ব দেন। পিতার মত সিকান্দার শাহও একডালা দুর্গে আশ্রয় নেন। ফিরোজ শাহ প্রাসাদ অবরোধ করেন। শেষপর্যন্ত ফিরোজ শাহ বাংলা থেকে তার বাহিনী ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হন এবং সিকান্দার শাহর সাথে সন্ধি করেন।[২] উত্তরাধিকারের লড়াই সিকান্দার শাহ ও তার প্রথম স্ত্রীর ১৭ জন পুত্র ছিল। দ্বিতীয় স্ত্রীর ছিল ১ জন পুত্র। দ্বিতীয়জন পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সোনারগাঁও ও সপ্তগ্রাম দখল করেন। শেষপর্যন্ত ১৩৯০ সালে রাজধানী পান্ডুয়ার কাছে গোয়ালপাড়ার যুদ্ধে তিনি তার পিতাকে পরাজিত ও হত্যা করেন[৩] এবং গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ নামধারণ করে সিংহাসনে বসেন। সিকান্দর শাহ (১৩৫৮-১৩৯০) শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ-এর জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বাংলার ইলিয়াসশাহী বংশের দ্বিতীয় সুলতান। তিন দশকেরও বেশি সময় তিনি বাংলা শাসন করেন এবং একজন ন্যায়পরায়ণ ও যোগ্য শাসক হিসেবে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করেন। সিংহাসনে আরোহণ করে সিকান্দর শাহ তাঁর কর্তৃত্ব সুদৃঢ় করেন এবং দিল্লির সুলতানের সাথে তাঁর পিতার সুসম্পর্ক রক্ষার নীতি অক্ষুণ্ন রাখেন। তিনি সুলতানের জন্য উপঢৌকনস্বরূপ পাঁচটি হাতিসহ আমীন খান নামক একজন দূতকে দিল্লিতে প্রেরণ করেন। তথাপি তিনি ফিরুজশাহ তুগলক-এর শত্রুতা এড়াতে পারেন নি। পারস্যের অভিজাত ও সোনারগাঁও-এর সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ-এর জামাতা জাফর খানের সোনারগাঁয়ের ওপর দাবির সমর্থনে তাঁকে সাহায্য করার অজুহাতে ফিরুজ শাহ বাংলায় অভিযান পরিচালনা করেন। দিল্লি সুলতানের আগমনে সিকান্দর যুদ্ধ পরিহার করে তাঁর বাহিনীসহ একডালা দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করেন। দিল্লির বাহিনী দীর্ঘদিন দুর্গটি অবরোধ করে রাখে। বাংলার সেনাবাহিনী বর্ষাকালের আগমন পর্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে দুর্গ রক্ষা করে। অবশেষে একটি শান্তিচুক্তি সম্পাদিত হয়, উভয় পক্ষে উপহার সামগ্রী বিনিময় হয় এবং ফিরুজ শাহ বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে ১৩৫৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ত্যাগ করেন। তাঁর দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ শাসনামলে সিকান্দর শাহ সুরম্য ইমারত ও মসজিদ নির্মাণ করেন। তন্মধ্যে পাণ্ডুয়ার বিখ্যাত আদিনা মসজিদ সর্বাধিক চিত্তাকর্ষক। সারা বাংলায় এটি সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম ইমারত। তাঁর রাজত্বকালে নির্মিত অপরাপর ইমারতের মধ্যে ছিল আঁখী সিরাজউদ্দীনের সমাধিসৌধ ও মসজিদ, গৌড়ের দক্ষিণ প্রবেশপথের কোতোয়ালী দরওয়াজা, গঙ্গারামপুরের (দিনাজপুরে) ভূগর্ভস্থ কামরা এবং মুল্লা সিমলার (হুগলির) একটি মসজিদ। সিকান্দর শাহ বিদ্বান ও জ্ঞানী-গুণীদের সাহচর্য পছন্দ করতেন এবং আলিম ও সুফিদের সম্মান দিতেন। পাণ্ডুয়ার বিখ্যাত পীর শেখ আলাউল হক (রঃ) তাঁর সমসাময়িক ছিলেন এবং তাঁর সাথে এ সাধকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তিনি হিন্দুদের প্রতিও উদার দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন। তাঁর রাজত্বকালের শেষের বছরগুলিতে তাঁর পুত্র গিয়াসউদ্দীনের অবাধ্যতা বা বিদ্রোহের কারণে শান্তি বিঘ্নিত হয়। পাণ্ডুয়ার নিকটবর্তী গোয়ালপাড়ায় পুত্র গিয়াসউদ্দীনের সাথে তাঁর যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে তিনি নিহত হন। স্থানীয় জনশ্রুতি এ যে, তিনি আদিনা মসজিদের পশ্চিম দেওয়াল সংলগ্ন কক্ষে সমাহিত আছেন। [আবু তাহের।
0 votes
by
সিকান্দার শাহ বাংলার সুলতান রাজত্ব ১৩৫৮–১৩৯০ পূর্বসূরি শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ উত্তরসূরি গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ বংশধর শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ রাজবংশ ইলিয়াস শাহি রাজবংশ আবুল মুজাহিদ সিকান্দর শাহ [১](শাসনকাল ১৩৫৮-১৩৯০ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন বাংলার শাসক ইলিয়াস শাহি রাজবংশের দ্বিতীয় সুলতান। সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ তার পিতা। ১৩৫৮ সালে তিনি পান্ডুয়ার আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন। ফিরোজ শাহ তুঘলকের দ্বিতীয় অভিযান তার শাসনামলে দিল্লীর সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক বাংলা জয়ের জন্য অভিযান পরিচালনা করেন। সোনারগাঁওয়ের প্রাক্তন শাসক ফখরুদ্দিন মোবারক শাহর জামাতা পারস্য বংশোদ্ভূত ব্যক্তি জাফর খান ফারস বাংলা থেকে পালিয়ে দিল্লী পৌছান। ফিরোজ শাহ তাকে বাংলার ন্যায়সঙ্গত শাসক বলে ঘোষণা করেন। তার প্ররোচণায় ১৩৫৯ সালে সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক ৮০,০০০ অশ্বারোহী, ৪৭০ হস্তী ও বড় আকারের পদাতিক বাহিনীর বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত সেনাবাহিনীকে ব্যক্তিগতভাবে নেতৃত্ব দেন। পিতার মত সিকান্দার শাহও একডালা দুর্গে আশ্রয় নেন। ফিরোজ শাহ প্রাসাদ অবরোধ করেন। শেষপর্যন্ত ফিরোজ শাহ বাংলা থেকে তার বাহিনী ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হন এবং সিকান্দার শাহর সাথে সন্ধি করেন।[২] উত্তরাধিকারের লড়াই সিকান্দার শাহ ও তার প্রথম স্ত্রীর ১৭ জন পুত্র ছিল। দ্বিতীয় স্ত্রীর ছিল ১ জন পুত্র। দ্বিতীয়জন পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সোনারগাঁও ও সপ্তগ্রাম দখল করেন। শেষপর্যন্ত ১৩৯০ সালে রাজধানী পান্ডুয়ার কাছে গোয়ালপাড়ার যুদ্ধে তিনি তার পিতাকে পরাজিত ও হত্যা করেন[৩] এবং গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ নামধারণ করে সিংহাসনে বসেন। সিকান্দর শাহ (১৩৫৮-১৩৯০) শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ-এর জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বাংলার ইলিয়াসশাহী বংশের দ্বিতীয় সুলতান। তিন দশকেরও বেশি সময় তিনি বাংলা শাসন করেন এবং একজন ন্যায়পরায়ণ ও যোগ্য শাসক হিসেবে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করেন। সিংহাসনে আরোহণ করে সিকান্দর শাহ তাঁর কর্তৃত্ব সুদৃঢ় করেন এবং দিল্লির সুলতানের সাথে তাঁর পিতার সুসম্পর্ক রক্ষার নীতি অক্ষুণ্ন রাখেন। তিনি সুলতানের জন্য উপঢৌকনস্বরূপ পাঁচটি হাতিসহ আমীন খান নামক একজন দূতকে দিল্লিতে প্রেরণ করেন। তথাপি তিনি ফিরুজশাহ তুগলক-এর শত্রুতা এড়াতে পারেন নি। পারস্যের অভিজাত ও সোনারগাঁও-এর সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ-এর জামাতা জাফর খানের সোনারগাঁয়ের ওপর দাবির সমর্থনে তাঁকে সাহায্য করার অজুহাতে ফিরুজ শাহ বাংলায় অভিযান পরিচালনা করেন। দিল্লি সুলতানের আগমনে সিকান্দর যুদ্ধ পরিহার করে তাঁর বাহিনীসহ একডালা দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করেন। দিল্লির বাহিনী দীর্ঘদিন দুর্গটি অবরোধ করে রাখে। বাংলার সেনাবাহিনী বর্ষাকালের আগমন পর্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে দুর্গ রক্ষা করে। অবশেষে একটি শান্তিচুক্তি সম্পাদিত হয়, উভয় পক্ষে উপহার সামগ্রী বিনিময় হয় এবং ফিরুজ শাহ বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে ১৩৫৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ত্যাগ করেন। তাঁর দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ শাসনামলে সিকান্দর শাহ সুরম্য ইমারত ও মসজিদ নির্মাণ করেন। তন্মধ্যে পাণ্ডুয়ার বিখ্যাত আদিনা মসজিদ সর্বাধিক চিত্তাকর্ষক। সারা বাংলায় এটি সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম ইমারত। তাঁর রাজত্বকালে নির্মিত অপরাপর ইমারতের মধ্যে ছিল আঁখী সিরাজউদ্দীনের সমাধিসৌধ ও মসজিদ, গৌড়ের দক্ষিণ প্রবেশপথের কোতোয়ালী দরওয়াজা, গঙ্গারামপুরের (দিনাজপুরে) ভূগর্ভস্থ কামরা এবং মুল্লা সিমলার (হুগলির) একটি মসজিদ। সিকান্দর শাহ বিদ্বান ও জ্ঞানী-গুণীদের সাহচর্য পছন্দ করতেন এবং আলিম ও সুফিদের সম্মান দিতেন। পাণ্ডুয়ার বিখ্যাত পীর শেখ আলাউল হক (রঃ) তাঁর সমসাময়িক ছিলেন এবং তাঁর সাথে এ সাধকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তিনি হিন্দুদের প্রতিও উদার দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন। তাঁর রাজত্বকালের শেষের বছরগুলিতে তাঁর পুত্র গিয়াসউদ্দীনের অবাধ্যতা বা বিদ্রোহের কারণে শান্তি বিঘ্নিত হয়। পাণ্ডুয়ার নিকটবর্তী গোয়ালপাড়ায় পুত্র গিয়াসউদ্দীনের সাথে তাঁর যুদ্ধ হয়।

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...