in ইতিহাস ও নিদর্শন by
গিয়াসউদ্দিন বলবন সম্পর্কে কিছু লিখ?

2 Answers

0 votes
by
 
Best answer
গিয়াসউদ্দিন বলবন দিল্লির সুলতান রাজত্বকাল ১২৬৬–১২৮৭ সমাধিস্থল বলবনের মাজার, মেহরাওলি প্রত্নতাত্ত্বিক পার্ক, দিল্লি পূর্বসূরি নাসিরউদ্দিন মাহমুদ উত্তরসূরি মুইজউদ্দিন কায়কোবাদ সন্তানাদি মুহাম্মদ খান নাসিরউদ্দিন বুগরা খান। গিয়াসউদ্দিন বলবন (reigned: 1266–86) (উর্দু: غیاث الدین بلبن) ছিলেন দিল্লির ৯ম মামলুক সুলতান। তিনি প্রথমে নাসিরউদ্দিন মাহমুদের উজির ছিলেন। নাসিরউদ্দিন নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যাওয়ার পর বলবন মসনদে বসেন। দিল্লির মেহরাওলিতে বলবনের মাজারের কবর বলবন ১২৬৬ থেকে ১২৮৬ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত শাসন করেছেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মুহাম্মদ খান মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। আরেকপুত্র নাসিরউদ্দিন বুগরা খান বাংলার শাসক হিসেবে থাকা পছন্দ করতেন। তাই বলবন তার পৌত্র কায়খসরুকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। তবে তার মৃত্যুর পর অভিজাত ব্যক্তিরা কায়কোবাদকে সুলতান মনোনীত করে। গিয়াসউদ্দিন বলবন (Ghias-ud-din Balban) :- গিয়াসউদ্দিন বলবন ১২৬৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন । ইলতুৎমিসের মৃত্যুর পর ইলবেরি তুর্কিজাত সুলতানদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন বলবনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । সিংহাসনে আরোহণ করার পরে গিয়াসউদ্দিন বলব্ন এক জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হন । ইলতুৎমিসের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারীদের অপদার্থতার ফলে সুলতানি শাসনের ভিত যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়েছিল । দিল্লির কোষাগার প্রায় শূন্য হয়ে যায় এবং মানমর্যাদা হ্রাস পায় । অন্যদিকে আমির-ওমরাহদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় । উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মোঙ্গল আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিলে দিল্লী সুলতানির অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার উপক্রম হয় । এই পরিস্থিতিতে গিয়াসউদ্দিন বলবন শক্ত হাতে হাল ধরেন ও এক্জন দক্ষ শাসকের পরিচয় দেন । এই পরিস্থিতিকে সামাল দেবার মতো যোগ্যতা গিয়াসউদ্দিন বলবনের ছিল । গিয়াসউদ্দিন বলবনের সময় চল্লিশচক্র নামে পরিচিত চল্লিশ জন ক্রীতদাস নিয়ে গঠিত আমীর ওমরাহদের একটি প্রভাবশালী চক্র সাম্রাজ্যের প্রায় সব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে নিজেদের প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টা করত । সুলতাল নিজে ব্যক্তিত্বশালী ও ক্ষমতাবান হলে এই চক্র তাঁকে মেনে চলতে বাধ্য হত না হলে নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েম করতে ব্যস্ত থাকত । (ক) সমস্যা সমাধানের প্রস্তুতি: গিয়াসউদ্দিন বলবন নিজ ক্ষমতা সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য রাজ্যে আইন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর ছিলেন । রাষ্ট্রের স্থায়িত্বের জন্য সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করে তুলেছিলেন । তিনি অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্যের দায়িত্ব যোগ্য হস্তে অর্পণ করে সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠিত করেন । তারপর তিনি দিল্লী ও দোয়াব অঞ্চলে শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপনের জন্য মেওয়াটি দস্যুদের দমন করেন । ভবিষ্যতে যাতে তারা পুনরায় শান্তি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে না পারে, তার জন্য তিনি গোয়ালিয়রে একটি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন । দোয়াব অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য তিনি কয়েকটি দুর্গ নির্মাণ করেন ও জালালির দুর্গটি মেরামত করেন । (খ) স্বৈরতন্ত্রের আদর্শ ও ক্ষমতার প্রকৃতি: গিয়াসউদ্দিন বলবন তাঁর স্বৈরতন্ত্রী শাসনব্যবস্থাকে কায়েম করতে একটি শক্তিশালী রাজতান্ত্রিক আদর্শ ও তত্ত্ব গড়ে তুলেছিলেন । দিল্লি সুলতানির মর্যাদা ও ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তিনি কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহন করেন। পারসিক শাসকদের অনুকরণে তিনি তাঁর রাজসভা গড়ে তোলেন। পারসিক আদব-কায়দা ও প্রথা চালু করে তিনি জনগণের সম্ভ্রম আদায় করেন। তিনি রাজসভায় সব সময় সুসজ্জিত হয়ে ও অনুচরবর্গ দ্বারা বেষ্ঠিত হয়ে প্রবেশ করতেন । রাজ্যের সমস্ত উচ্চ পদের দরজা সাধারণ লোকের কাছে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বাইরের চাকচিক্য দিয়ে লোকের মন ভুলিয়ে এইভাবে তিনি তাদের মধ্যে ভীত সন্ত্রস্ত ভাব জাগিয়ে তোলেন । সুলতানের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে তিনি সর্বদা সচেতন ছিলেন । তিনি বিশ্বাস করতেন সুলতানের প্রধান কর্তব্য হলো চারটি —যথা (১) ধর্ম ও শরিয়তের অনুশাসন মেনে চলা , (২) অন্যায় কাজ কর্ম বন্ধ করা , (৩) ধার্মিক ব্যক্তিকে সরকারি কর্মে নিয়োগ করা, এবং (৪) ন্যায় বিচার করা । তিনি বলতেন রাষ্ট্রের গৌরব নির্ভর করে এমন এক শাসন ব্যবস্থার উপরে, যা জনগণকে সুখী ও সমৃদ্ধশালী করে তোলে । (গ) মোঙ্গল আক্রমণ: আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে শাসন ব্যবস্থাকে দৃঢ় করে তোলার সঙ্গে সঙ্গে মোঙ্গল আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, গিয়াসউদ্দিন বলবন দৃষ্টি দেন । তিনি লাহোরের দুর্গটি পুনরায় নির্মাণ করার আদেশ দেন । দীর্ঘদিন ধরে সুলতানের আত্মীয় শের খান যোগ্যতার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন । গিয়াসউদ্দিন বলবন তাঁকে সন্দেহবশত হত্যা করেন বলে বরনি অভিযোগ করেন । এই হত্যাকান্ড গিয়াসউদ্দিন বলবনের রাজনৈতিক অদুরদর্শিতার পরিচায়ক । শের খানের হত্যার ফলে মোঙ্গলরা ভারত আক্রমণ করতে প্রলুব্ধ হয় । তখন সুলতান জ্যৈষ্ঠ পুত্র মহম্মদকে সুলতানের শাসক নিযুক্ত করেন ও দ্বিতীয় পুত্র বুগরা খানকে সামান ও সুনামের দায়িত্ব দেন । এঁদের যৌথ প্রচেষ্ঠায় সাময়িকভাবে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত হয় । কিন্তু মোঙ্গলরা আবার আক্রমণ করলে মহম্মদ প্রাণ হারান । সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন এই শোকে শেষ পর্যন্ত মারা যান । (ঘ) কৃতিত্ব : (১) যে অবস্থার মধ্যে গিয়াসউদ্দিন বলবন দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন, তাতে সুলতানকে বাধ্য হয়েই অনেক সময় কঠোর নীতি গ্রহন করতে হয় । সিংহাসনে আরোহণের পর অসীম সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন চরম প্রতিক্রিয়াশীল চল্লিশ চক্রের উচ্ছেদ করেন । (২) সুলতান হয়ে তিনি একদিকে অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অন্যদিকে সীমান্তে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে নিজের দুই পুত্রকে মোতায়েন করেন । (৩) দিল্লির সন্নিহিত অঞ্চলে তিনি মেওয়াটি দস্যুদের কঠোর ভাবে দমন করে রাজধানীর নিরাপত্তা বজায় রাখেন । (৪) বাদাউনের নিকটবর্তী অঞ্চলের রাজপুত দুর্গগুলি ধ্বংস করেন এবং রাজপুত জমিদারদের সম্ভাব্য বিদ্রোহ নির্মূল করার উদ্দেশ্যে সেখানে আফগান সৈন্য মোতায়েন করেন । (৫) পরবর্তীকালে বাংলার শাসনকর্তা তুঘরিল খাঁর বিদ্রোহ দমন করে গিয়াসউদ্দিন বলবন নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে সমর্থ হন । (৬) অভিজাতদের গতিবিধির উপর লক্ষ রাখার জন্য তাঁর আমলে অসংখ্য গুপ্তচর নিয়োগ করা হয় । যাই হোক, যে দৃঢ়তার সঙ্গে গিয়াসউদ্দিন বলবন দিল্লির সুলতানিকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করেন, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে । তিনি সারা জীবনই অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকার ফলে সাম্রাজ্য বিস্তারের সুযোগ পান নি । স্বৈরতন্ত্রী শাসনকে তিনি দৃঢ় ভিত্তির উপর স্থাপন করতে পারেন নি । সন্দেহ ও অবিশ্বাস তাঁর বিচারবুদ্ধিকে মাঝে মাঝে আচ্ছন্ন করে দিয়েছিল । সামরিক দক্ষতার উল্লেখযোগ্য নিদর্শন তিনি রাখতে পারেন নি । কিন্তু এই সমস্ত ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও গিয়াসউদ্দিন বলবনের কৃতিত্ব অস্বীকার করা যায় না । তিনি দিল্লি সুলতানির স্থায়িত্ব প্রদান করেন । ১২৮৭ খ্রিস্টাব্দে গিয়াসউদ্দিন বলবনের মৃত্যুর পর দাস বংশের [Slave dynasty] পতন শুরু হয় । গিয়াসউদ্দিন বলবন ভারতবর্ষে আদি তুর্কি শাসনের নবম শাসক। তাঁর পূর্বনাম ছিল বাহাউদ্দিন। তিনি তুর্কি ইলবেরি বংশের ছিলেন। শৈশবে তিনি মোঙ্গলদের হাতে বন্দি হন। পরে মোঙ্গলদের কাছ থেকে জামালউদ্দিন ক্রয় করে ইলতুৎমিস-এর কাছে বিক্রয় করেন। অল্পদিনেই তিনি যুদ্ধ এবং রাজনীতিতে বিশেষ পারদর্শী হয়ে উঠেন। এই সূত্রে তিনি ইলতুৎমিস-এর চল্লিশজন ক্রীতদাসের দলের অন্যতম সদস্যে পরিণত হন। সুলতানা রাজিয়া (১২৩৬-৪০খ্রিষ্টাব্দ)-র শাসনামলে তিনি আমির-ই-শিকার পদ লাভ করেন। কিন্তু রাজিয়ার পতনের সময় তিনি তুর্কি আমিরদের পক্ষালম্বন করেছিলেন। এই কারণে বাহরাম শাহ্ (১২৪০-৪২ খ্রিষ্টাব্দ) ক্ষমতা লাভের পর, তাঁকে পাঞ্জাবের অন্তর্গত গুরগাঁ জেলার জায়গির দান করেছিলেন। ১২৪২ খ্রিষ্টাব্দে আমিররা বাহরাম শাহ্কে অপসারিত করে, ইলতুৎমিস-এর অপর পুত্র আলাউদ্দিন মাসুদ শাহকে সিংহাসনে বসান। গিয়াসউদ্দিন বিষয়টি সহজভাবে নেন নি। তিন ইলতুৎমিস-এর অপর পুত্র নাসিরউদ্দিন মাহমুদ-এর সাথে ষড়যন্ত্র করে, ১২৪৪ খ্রিষ্টাব্দে মাসুদ শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং নাসিরুদ্দিন মাহমুদকে দিল্লীর সিংহাসনে বসান। নাসিরুদ্দিন মাহমুদ ছিলেন শান্তিপ্রিয় এবং ধর্মভীরু। এই কারণে তিনি অধিকাংশ সময় ধর্মচর্চার ভিতরেই থাকতেন। এই কারণে আমিরা তাঁকে সিংহাসনে বসিয়ে রেখে, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতেন। নাসিরুদ্দিন মাহমুদকে ক্ষমতায় আনার সাফল্যের কারণে, আমিরদের ভিতরে গিয়াসউদ্দিন মূল শাসন ক্ষমতায় চলে আসেন। তিনি নিজের আত্মীয়দের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে, নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। একই সাথে তিনি কেন্দ্রীয় সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। নাসিরুদ্দিন মাহমুদ-এর রাজত্বের সময় যতগুলো বিদ্রোহ হয়েছে, তার সবই গিয়াসউদ্দিন বলবন সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করেন। ফলে প্রকৃত সুলতান বলবনই হয়ে উঠেছিল। ১২৪৬ খ্রিষ্টাব্দে মুলতান থেকে মোঙ্গলদের বিতারিত করার সময়, তিনি বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দেন। এর পুরস্কার স্বরূপ নাসিরুদ্দিন তাঁকে প্রধান মন্ত্রীত্বের পদ দান করেন। পরে তিনি তাঁর নিজ কন্যার সাথে গিয়াসউদ্দিনের বিবাহ দেন। ১২৪৯ খ্রিষ্টাব্দে মুলতানের শাসনকর্তা সৈফউদ্দিন হাসানকে পরাজিত করে, সেখানে কেন্দ্রের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। ১২৫১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মধ্য প্রদেশের চান্দেরি শহর দখল করেছিলেন। ১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দে মুলতানের শাসনকর্তা কাস্লু খাঁ অযোধ্যার শাসনকর্তাকে সাথে নিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ফলে বলবন কাস্লু খাঁর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তাঁকে বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করেন। উল্লেখ্য, এই সময় পাঞ্জাবের অধিকাংশ অঞ্চল মোঙ্গলদের অধিকারে ছিল। ১২৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অপুত্রক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ফলে তাঁর মৃত্যুর পর, গিয়াসউদ্দিন বলবন সিংহাসনে লাভ করেন। ১২৬৬ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের অধিকার গিয়াসউদ্দিনের ছিল। তিনি আমিন খাঁকে শাসনকর্তা এবং মুঘিসউদ্দিন তুঘ্রালকে সহকারী-শাসনকর্তা পদে নিযুক্ত করেন। আমিন খাঁ নামে মাত্র শাসনকর্তা ছিলেন। তাঁর নামে বাংলার শাসক হয়ে উঠেন তুঘ্রাল। তিনি ঢাকা, ফরিদপুর এবং ত্রিপুরা দখলের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এছাড়া তিনি বরিশাল অঞ্চলে দনুজ রাই নামক কায়স্থ রাজার সাথে যুদ্ধ করেছিলেন। এই যুদ্ধের ফলাফল সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। উড়িষ্যা আক্রমণ করে সেখানে লুটতরাজ চালান। বাংলদেশের রাঢ় অঞ্চলেও তিনি অভিযান চালিয়ে দখল করেন। তুঘ্রালের এই সকল বিজয়ের পর তিনি নিজেকে অত্যন্ত শক্তিশালী শাসক হিসেবে ভাবা শুরু করেন। এর ভিতর গিয়াসউদ্দিন বলবন-এর মিথ্যা মৃত্যু সংবাদ প্রচারতি হলে, নিজেকে স্বাধীন সুলতান হিসেবে ঘোষণা দেন এবং আমিন খাঁকে বিতারিত করেন। ফলে ১২৮০ খ্রিষ্টাব্দে তুঘ্রালকে শায়েস্তা করার জন্য বাংলা আক্রমণ করেন। তুঘ্রাল দিল্লীর সেনাবাহিনীর মুখোমুখী না হয়ে লক্ষ্মণাবতী ত্যাগ করেন। সুলতানের বাহিনী লক্ষ্মণাবতী দখল করেন এবং তুঘ্রালকে বন্দী করার জন্য তাঁর পশ্চাদানুসরণ করেন। উড়িষ্যা সীমান্তের কাছে, সুলতান বাহিনী তাঁকে আকস্মিকভাবে আক্রমণ করেন। যুদ্ধে তিনি পরাজিত হলে, তাঁকে বন্দী করে লক্ষ্মণাবতীতে আনা হয়। ১২৮৩ খ্রিষ্টাব্দের দিকে সুলতান তাঁকে সপরিবারে হত্যা করেন। তুঘ্রালের পতনের পর, গিয়াসউদ্দিন কিছুদিন লক্ষ্মণাবতীতে কাটান। তারপর তাঁর দ্বিতীয় পুত্র বখরা খাঁর কাছে বাংলার শাসনভার ন্যস্ত করে তিনি দিল্লীতে ফিরে যান। ১২৮৬ খ্রিষ্টাব্দে মোঙ্গলরা মুলতান আক্রমণ করে। এই সময় মুলতানের শাসনকর্তা ছিলেন গিয়াসউদ্দিনের প্রথম পুত্র সুলতান মহম্মদ। সুলতান মহম্মদ মোঙ্গলদের যথাসাধ্য বাধা দিয়েও পরাজিত ও নিহত হন। ফলে বৃদ্ধ বয়সে তিনি নিজে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং মুলতানের রাজধানী লাহোর পুনরুদ্ধার করেন। কিন্তু তাঁর পুত্রের মৃত্যুতে অত্যন্ত শোকাহত হন। তিনি বাংলার শাসক বঘরা খাঁকে দিল্লীর সিংহাসনের উত্তরাধিকারী করেন। বঘরা খাঁ এই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করলে, তিনি প্রথম পুত্র সুলতান মহম্মদ-এর পুত্র কাইখসরুকে উত্তরাধিকারী করে যান। এরপর ১২৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু গিয়াসউদ্দিন বলবন-এর মৃত্যুর পর, আমিররা কাইখুস্রুকে বাতিল করে বঘরা খাঁর পুত্র কায়কোবাদকে সিংহাসনে বসান। কায়কোবাদ ১৮ বৎসর বয়সে রাজত্ব লাভ করেন। তিনি রাজ্য চালনায় অনভিজ্ঞ ছিলেন এবং ইন্দ্রিয়পরায়ণ ছিলেন। ফলে কেন্দ্রীয় শাসন ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সময় তুর্কি এবং খলজিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই দ্বন্দ্বে তুর্কিরা পরাজিত হলে, খলজিরা ক্ষমতা দখল করে। এরা কাবকোবাদকে হত্যা করে এবং তাঁর শিশুপুত্র কায়ুমার্সকে কারাগারে নিক্ষেপ করে। এই সময় খলজি নেতা জালালউদ্দিন নিজেকে সুলতান হিসেবে ঘোষণা দেন। এই সূত্রে দিল্লীতে খলজি শাসন শুরু হয়।
0 votes
by
গিয়াসউদ্দিন বলবন দিল্লির সুলতান রাজত্বকাল ১২৬৬–১২৮৭ সমাধিস্থল বলবনের মাজার, মেহরাওলি প্রত্নতাত্ত্বিক পার্ক, দিল্লি পূর্বসূরি নাসিরউদ্দিন মাহমুদ উত্তরসূরি মুইজউদ্দিন কায়কোবাদ সন্তানাদি মুহাম্মদ খান নাসিরউদ্দিন বুগরা খান। গিয়াসউদ্দিন বলবন (reigned: 1266–86) (উর্দু: غیاث الدین بلبن) ছিলেন দিল্লির ৯ম মামলুক সুলতান। তিনি প্রথমে নাসিরউদ্দিন মাহমুদের উজির ছিলেন। নাসিরউদ্দিন নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যাওয়ার পর বলবন মসনদে বসেন। দিল্লির মেহরাওলিতে বলবনের মাজারের কবর বলবন ১২৬৬ থেকে ১২৮৬ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত শাসন করেছেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মুহাম্মদ খান মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। আরেকপুত্র নাসিরউদ্দিন বুগরা খান বাংলার শাসক হিসেবে থাকা পছন্দ করতেন। তাই বলবন তার পৌত্র কায়খসরুকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। তবে তার মৃত্যুর পর অভিজাত ব্যক্তিরা কায়কোবাদকে সুলতান মনোনীত করে। গিয়াসউদ্দিন বলবন (Ghias-ud-din Balban) :- গিয়াসউদ্দিন বলবন ১২৬৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন । ইলতুৎমিসের মৃত্যুর পর ইলবেরি তুর্কিজাত সুলতানদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন বলবনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । সিংহাসনে আরোহণ করার পরে গিয়াসউদ্দিন বলব্ন এক জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হন । ইলতুৎমিসের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারীদের অপদার্থতার ফলে সুলতানি শাসনের ভিত যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়েছিল । দিল্লির কোষাগার প্রায় শূন্য হয়ে যায় এবং মানমর্যাদা হ্রাস পায় । অন্যদিকে আমির-ওমরাহদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় । উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মোঙ্গল আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিলে দিল্লী সুলতানির অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার উপক্রম হয় । এই পরিস্থিতিতে গিয়াসউদ্দিন বলবন শক্ত হাতে হাল ধরেন ও এক্জন দক্ষ শাসকের পরিচয় দেন । এই পরিস্থিতিকে সামাল দেবার মতো যোগ্যতা গিয়াসউদ্দিন বলবনের ছিল । গিয়াসউদ্দিন বলবনের সময় চল্লিশচক্র নামে পরিচিত চল্লিশ জন ক্রীতদাস নিয়ে গঠিত আমীর ওমরাহদের একটি প্রভাবশালী চক্র সাম্রাজ্যের প্রায় সব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে নিজেদের প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টা করত । সুলতাল নিজে ব্যক্তিত্বশালী ও ক্ষমতাবান হলে এই চক্র তাঁকে মেনে চলতে বাধ্য হত না হলে নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েম করতে ব্যস্ত থাকত । (ক) সমস্যা সমাধানের প্রস্তুতি: গিয়াসউদ্দিন বলবন নিজ ক্ষমতা সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য রাজ্যে আইন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর ছিলেন । রাষ্ট্রের স্থায়িত্বের জন্য সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করে তুলেছিলেন । তিনি অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্যের দায়িত্ব যোগ্য হস্তে অর্পণ করে সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠিত করেন । তারপর তিনি দিল্লী ও দোয়াব অঞ্চলে শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপনের জন্য মেওয়াটি দস্যুদের দমন করেন । ভবিষ্যতে যাতে তারা পুনরায় শান্তি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে না পারে, তার জন্য তিনি গোয়ালিয়রে একটি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন । দোয়াব অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য তিনি কয়েকটি দুর্গ নির্মাণ করেন ও জালালির দুর্গটি মেরামত করেন । (খ) স্বৈরতন্ত্রের আদর্শ ও ক্ষমতার প্রকৃতি: গিয়াসউদ্দিন বলবন তাঁর স্বৈরতন্ত্রী শাসনব্যবস্থাকে কায়েম করতে একটি শক্তিশালী রাজতান্ত্রিক আদর্শ ও তত্ত্ব গড়ে তুলেছিলেন । দিল্লি সুলতানির মর্যাদা ও ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তিনি কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহন করেন। পারসিক শাসকদের অনুকরণে তিনি তাঁর রাজসভা গড়ে তোলেন। পারসিক আদব-কায়দা ও প্রথা চালু করে তিনি জনগণের সম্ভ্রম আদায় করেন। তিনি রাজসভায় সব সময় সুসজ্জিত হয়ে ও অনুচরবর্গ দ্বারা বেষ্ঠিত হয়ে প্রবেশ করতেন । রাজ্যের সমস্ত উচ্চ পদের দরজা সাধারণ লোকের কাছে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বাইরের চাকচিক্য দিয়ে লোকের মন ভুলিয়ে এইভাবে তিনি তাদের মধ্যে ভীত সন্ত্রস্ত ভাব জাগিয়ে তোলেন । সুলতানের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে তিনি সর্বদা সচেতন ছিলেন । তিনি বিশ্বাস করতেন সুলতানের প্রধান কর্তব্য হলো চারটি —যথা (১) ধর্ম ও শরিয়তের অনুশাসন মেনে চলা , (২) অন্যায় কাজ কর্ম বন্ধ করা , (৩) ধার্মিক ব্যক্তিকে সরকারি কর্মে নিয়োগ করা, এবং (৪) ন্যায় বিচার করা । তিনি বলতেন রাষ্ট্রের গৌরব নির্ভর করে এমন এক শাসন ব্যবস্থার উপরে, যা জনগণকে সুখী ও সমৃদ্ধশালী করে তোলে । (গ) মোঙ্গল আক্রমণ: আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে শাসন ব্যবস্থাকে দৃঢ় করে তোলার সঙ্গে সঙ্গে মোঙ্গল আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, গিয়াসউদ্দিন বলবন দৃষ্টি দেন । তিনি লাহোরের দুর্গটি পুনরায় নির্মাণ করার আদেশ দেন । দীর্ঘদিন ধরে সুলতানের আত্মীয় শের খান যোগ্যতার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন । গিয়াসউদ্দিন বলবন তাঁকে সন্দেহবশত হত্যা করেন বলে বরনি অভিযোগ করেন । এই হত্যাকান্ড গিয়াসউদ্দিন বলবনের রাজনৈতিক অদুরদর্শিতার পরিচায়ক । শের খানের হত্যার ফলে মোঙ্গলরা ভারত আক্রমণ করতে প্রলুব্ধ হয় । তখন সুলতান জ্যৈষ্ঠ পুত্র মহম্মদকে সুলতানের শাসক নিযুক্ত করেন ও দ্বিতীয় পুত্র বুগরা খানকে সামান ও সুনামের দায়িত্ব দেন । এঁদের যৌথ প্রচেষ্ঠায় সাময়িকভাবে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত হয় । কিন্তু মোঙ্গলরা আবার আক্রমণ করলে মহম্মদ প্রাণ হারান । সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন এই শোকে শেষ পর্যন্ত মারা যান । (ঘ) কৃতিত্ব : (১) যে অবস্থার মধ্যে গিয়াসউদ্দিন বলবন দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন, তাতে সুলতানকে বাধ্য হয়েই অনেক সময় কঠোর নীতি গ্রহন করতে হয় । সিংহাসনে আরোহণের পর অসীম সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন চরম প্রতিক্রিয়াশীল চল্লিশ চক্রের উচ্ছেদ করেন । (২) সুলতান হয়ে তিনি একদিকে অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অন্যদিকে সীমান্তে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে নিজের দুই পুত্রকে মোতায়েন করেন । (৩) দিল্লির সন্নিহিত অঞ্চলে তিনি মেওয়াটি দস্যুদের কঠোর ভাবে দমন করে রাজধানীর নিরাপত্তা বজায় রাখেন । (৪) বাদাউনের নিকটবর্তী অঞ্চলের রাজপুত দুর্গগুলি ধ্বংস করেন এবং রাজপুত জমিদারদের সম্ভাব্য বিদ্রোহ নির্মূল করার উদ্দেশ্যে সেখানে আফগান সৈন্য মোতায়েন করেন । (৫) পরবর্তীকালে বাংলার শাসনকর্তা তুঘরিল খাঁর বিদ্রোহ দমন করে গিয়াসউদ্দিন বলবন নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে সমর্থ হন । (৬) অভিজাতদের গতিবিধির উপর লক্ষ রাখার জন্য তাঁর আমলে অসংখ্য গুপ্তচর নিয়োগ করা হয় । যাই হোক, যে দৃঢ়তার সঙ্গে গিয়াসউদ্দিন বলবন দিল্লির সুলতানিকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করেন, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে । তিনি সারা জীবনই অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকার ফলে সাম্রাজ্য বিস্তারের সুযোগ পান নি । স্বৈরতন্ত্রী শাসনকে তিনি দৃঢ় ভিত্তির উপর স্থাপন করতে পারেন নি । সন্দেহ ও অবিশ্বাস তাঁর বিচারবুদ্ধিকে মাঝে মাঝে আচ্ছন্ন করে দিয়েছিল । সামরিক দক্ষতার উল্লেখযোগ্য নিদর্শন তিনি রাখতে পারেন নি । কিন্তু এই সমস্ত ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও গিয়াসউদ্দিন বলবনের কৃতিত্ব অস্বীকার করা যায় না । তিনি দিল্লি সুলতানির স্থায়িত্ব প্রদান করেন । ১২৮৭ খ্রিস্টাব্দে গিয়াসউদ্দিন বলবনের মৃত্যুর পর দাস বংশের [Slave dynasty] পতন শুরু হয় । গিয়াসউদ্দিন বলবন ভারতবর্ষে আদি তুর্কি শাসনের নবম শাসক। তাঁর পূর্বনাম ছিল বাহাউদ্দিন। তিনি তুর্কি ইলবেরি বংশের ছিলেন। শৈশবে তিনি মোঙ্গলদের হাতে বন্দি হন। পরে মোঙ্গলদের কাছ থেকে জামালউদ্দিন ক্রয় করে ইলতুৎমিস-এর কাছে বিক্রয় করেন। অল্পদিনেই তিনি যুদ্ধ এবং রাজনীতিতে বিশেষ পারদর্শী হয়ে উঠেন। এই সূত্রে তিনি ইলতুৎমিস-এর চল্লিশজন ক্রীতদাসের দলের অন্যতম সদস্যে পরিণত হন। সুলতানা রাজিয়া (১২৩৬-৪০খ্রিষ্টাব্দ)-র শাসনামলে তিনি আমির-ই-শিকার পদ লাভ করেন। কিন্তু রাজিয়ার পতনের সময় তিনি তুর্কি আমিরদের পক্ষালম্বন করেছিলেন। এই কারণে বাহরাম শাহ্ (১২৪০-৪২ খ্রিষ্টাব্দ) ক্ষমতা লাভের পর, তাঁকে পাঞ্জাবের অন্তর্গত গুরগাঁ জেলার জায়গির দান করেছিলেন। ১২৪২ খ্রিষ্টাব্দে আমিররা বাহরাম শাহ্কে অপসারিত করে, ইলতুৎমিস-এর অপর পুত্র আলাউদ্দিন মাসুদ শাহকে সিংহাসনে বসান। গিয়াসউদ্দিন বিষয়টি সহজভাবে নেন নি। তিন ইলতুৎমিস-এর অপর পুত্র নাসিরউদ্দিন মাহমুদ-এর সাথে ষড়যন্ত্র করে, ১২৪৪ খ্রিষ্টাব্দে মাসুদ শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং নাসিরুদ্দিন মাহমুদকে দিল্লীর সিংহাসনে বসান। নাসিরুদ্দিন মাহমুদ ছিলেন শান্তিপ্রিয় এবং ধর্মভীরু। এই কারণে তিনি অধিকাংশ সময় ধর্মচর্চার ভিতরেই থাকতেন। এই কারণে আমিরা তাঁকে সিংহাসনে বসিয়ে রেখে, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতেন। নাসিরুদ্দিন মাহমুদকে ক্ষমতায় আনার সাফল্যের কারণে, আমিরদের ভিতরে গিয়াসউদ্দিন মূল শাসন ক্ষমতায় চলে আসেন। তিনি নিজের আত্মীয়দের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে, নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। একই সাথে তিনি কেন্দ্রীয় সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। নাসিরুদ্দিন মাহমুদ-এর রাজত্বের সময় যতগুলো বিদ্রোহ হয়েছে, তার সবই গিয়াসউদ্দিন বলবন সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করেন। ফলে প্রকৃত সুলতান বলবনই হয়ে উঠেছিল। ১২৪৬ খ্রিষ্টাব্দে মুলতান থেকে মোঙ্গলদের বিতারিত করার সময়, তিনি বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দেন। এর পুরস্কার স্বরূপ নাসিরুদ্দিন তাঁকে প্রধান মন্ত্রীত্বের পদ দান করেন।

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...