in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
ওহুদ যুদ্ধ সম্পর্কে কিছু লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
৩য় হিজরীর জুমাদাল আখেরাহ। মদীনার পথে ব্যবসায়ের প্রতিবন্ধকতার কথা ভেবে কুরায়েশ বাণিজ্য কাফেলা মদীনার পূর্বদিক দিয়ে দীর্ঘ পথ ঘুরে সম্পূর্ণ অজানা পথে নাজদ হয়ে সিরিয়া যাবার মনস্থ করে। এ খবর মদীনায় পৌঁছে গেলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যায়েদ বিন হারেছাহর নেতৃত্বে ১০০ জনের একটি অশ্বারোহী দল প্রেরণ করেন। তারা অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথে অগ্রসর হয়ে ‘ক্বারদাহ’ (قَرْدة) নামক প্রস্রবণের কাছে পৌঁছে তাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অতর্কিতে এই হামলার মুকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে কাফেলা নেতা সাফওয়ান বিন উমাইয়া সবকিছু ফেলে পালিয়ে যান। মজুরীর বিনিময়ে নেওয়া কুরায়েশদের পথ প্রদর্শক ফুরাত বিন হাইয়ান(فُرَاتُ بنُ حَيَّانَ) এবং বলা হয়েছে যে, আরও অন্য দুজন বন্দী হয়ে মদীনায় নীত হয়। অতঃপর তারা রাসূল (সাঃ)-এর হাতে বায়‘আত করে ইসলাম কবুল করেন। এই সফরে বড় বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। যাদের মধ্যে কুরায়েশ নেতা আবু সুফিয়ান ইবনু হারবের নিকটেই ছিল সর্বাধিক রৌপ্য ও রৌপ্য সামগ্রীসমূহ। ফলে আনুমানিক এক লক্ষ দেরহামের রৌপ্য সহ বিপুল পরিমাণ গণীমতের মাল হস্তগত হয়। এই পরাজয়ে কুরায়েশরা হতাশ হয়ে পড়ে। এখন তাদের সামনে মাত্র দু’টি পথই খোলা রইল। যিদ ও অহংকার পরিত্যাগ করে মুসলমানদের সাথে সন্ধি করা অথবা যুদ্ধের মাধ্যমে হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা। বলা বাহুল্য, তারা শেষটাই গ্রহণ করে এবং যা ওহুদ যুদ্ধকে অনিবার্য করে তোলে। সোজাপথে না গিয়ে পালানো পথে সিরিয়া গমনের কাপুরুষতাকে কটাক্ষ করে রাসূল (সাঃ)-এর সভাকবি হাসসান বিন সাবেত আনছারী (রাঃ) কুরায়েশ নেতাদের বিরুদ্ধে এ সময় কবিতা পাঠ করেন।[ইবনু সা‘দ ২/২৭; ইবনু হিশাম ২/৫০] ওহুদ যুদ্ধ : (৩য় হিজরীর ৭ই শাওয়াল শনিবার সকাল) ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ কুরায়েশরা আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে ৩০০০ সৈন্যের সুসজ্জিত বাহিনী নিয়ে মদীনার তিন মাইল উত্তরে ওহুদ পাহাড়ের পাদদেশে শিবির সন্নিবেশ করে। এই বাহিনীর সাথে আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দ বিনতে ওৎবার নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি মহিলা দল ছিল, যারা নেচে-গেয়ে ও উত্তেজক কবিতা পাঠ করে তাদের সৈন্যদের উত্তেজিত করে। এই যুদ্ধে রাসূল (সাঃ)-এর নেতৃত্বে প্রায় ৭০০ সৈন্য ছিলেন। প্রচন্ড যুদ্ধ শেষে একটি ভুলের জন্য মুসলমানদের সাক্ষাৎ বিজয় অবশেষে বিপর্যয়ে পরিণত হয়। মুসলিম পক্ষে ৭০ জন শহীদ ও ৪০ জন আহত হন। তার মধ্যে মুহাজির ৪ জন, আনছার ৬৫ জন। যাদের মধ্যে আউস ২৪, খাযরাজ ৪১ এবং ইহূদী ১ জন। কুরায়েশ পক্ষে ৩৭ জন নিহত হয়। তবে এই হিসাব চূড়ান্ত নয়। বরং কুরায়েশ পক্ষে হতাহতের সংখ্যা ছিল অনেক বেশী (‘জয়-পরাজয় পর্যালোচনা’ অনুচ্ছেদ দ্রষ্টব্য)। এই যুদ্ধে মুসলমানরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কুরায়েশরা বিজয়ী হয়নি। বরং তারা ভীত হয়ে ফিরে যায়। এ যুদ্ধ প্রসঙ্গে সূরা আলে ইমরানের ১২১-১৭৯ পর্যন্ত ৬০টি আয়াত নাযিল হয়। বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপ।- ওহুদ-এর পরিচয় : ━━━━━━━━━━━ মদীনার ওহুদ পাহাড়ের নামে এই যুদ্ধের নামকরণ হয়েছে। পাহাড়টি অন্য পাহাড়ের সাথে যুক্ত না থেকে ‘একক’ হওয়ায় এর নাম ওহুদ (أُحُدٌ) হয়েছে। যার পর থেকে ত্বায়েফের পাহাড় (جَبَلُ الطائف) শুরু হয়েছে। এটি মসজিদে নববীর ‘মাজীদী দরজা’ (باب الْمَجِيدى) থেকে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এই পাহাড়ের কতগুলি চূড়া রয়েছে। এর সরাসরি দক্ষিণে ছোট্ট পাহাড়টির নাম ‘আয়নায়েন’(عَيْنَين) যা পরবর্তীতে ‘জাবালুর রুমাত’ (جَبَلُ الرُّمَاة) বা তীরন্দাযদের পাহাড় বলে পরিচিত হয়। এ দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী বৃহৎ উপত্যকার নাম ‘কুনাত’ (وَادِى قُنَاة)। যেখানে ওহুদ যুদ্ধ সংঘটিত হয় বদর যুদ্ধের প্রায় ১১ মাস পরে’ (সীরাহ সহীহাহ ২/৩৭৮)। যুদ্ধের কারণ : ━━━━━━━━ মক্কা থেকে শামে কুরায়েশদের ব্যবসায়ের পথ নিরংকুশ ও নিরাপদ করাই ছিল তাদের এই যুদ্ধের মূল কারণ। অতঃপর প্রত্যক্ষ কারণ ছিল, বদর যুদ্ধে কুরায়েশদের শোচনীয় পরাজয়, ‘সাভীক্ব’ যুদ্ধে ছাতুর বস্তাসহ অন্যান্য সাজ-সরঞ্জাম ফেলে আবু সুফিয়ানের পালিয়ে আসার

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...