in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
বনু কুরাইজা যুদ্ধ সম্পর্কে কিছু লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
হিজরীর যুলক্বা‘দাহ ও যুলহিজ্জাহ (মার্চ ও এপ্রিল ৬২৬ খৃ.) খন্দক যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে উম্মে সালামার ঘরে যোহরের সময় যখন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) গোসল করছিলেন, তখন জিব্রীল এসে বললেন, আপনি অস্ত্র নামিয়ে ফেলেছেন, অথচ ফেরেশতারা এখনো অস্ত্র নামায়নি। দ্রুত তাদের দিকে ধাবিত হউন! রাসূল (সাঃ) বললেন, কোন দিকে? জবাবে তিনি বনু কুরাইজার দিকে ইশারা করলেন। অতঃপর রাসূল (সাঃ) সেদিকে বেরিয়ে গেলেন’ (বুখারী হা/৪১১৭)। বনু কুরাইজার দুর্গ ছিল মসজিদে নববী থেকে ৬ মাইল বা প্রায় ১০ কি. মি. দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা প্রচার করে দিলেন, لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلاَّ فِى بَنِى قُرَيْظَةَ ‘কেউ যেন বনু কুরাইজায় পৌঁছানোর আগে আছর না পড়ে’ (বুখারী হা/৯৪৬)। অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূমের উপরে মদীনার প্রশাসন ভার অর্পণ করে ৩,০০০ সৈন্য নিয়ে তিনি বনু কুরাইজা অভিমুখে রওয়ানা হলেন। অবশ্য সাহাবীদের কেউ রাস্তাতেই আছর পড়ে নেন। কেউ পৌঁছে গিয়ে আছর পড়েন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এজন্য কাউকে কিছু বলেননি (ঐ)। কেননা এর দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল সকলের দ্রুত বের হওয়া। অতঃপর যথারীতি বনু কুরাইজার দুর্গ অবরোধ করা হয়, যা ২৫ দিন স্থায়ী হয়। অবশেষে তারা আত্মসমর্পণ করে এবং তাদের সাবালক ও সক্ষম পুরুষদের বন্দী করা হয়। এদের সম্পর্কে ফায়ছালার দায়িত্ব তাদের দাবী অনুযায়ী তাদের মিত্র আওস গোত্রের নেতা সা‘দ বিন মু‘আযকে অর্পণ করা হয়। তিনি তাদের বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি স্বরূপ সবাইকে হত্যা করার নির্দেশ দেন। সেমতে তাদের নেতা হুয়াই বিন আখত্বাব সহ সবাইকে হত্যা করা হয়’ (বুখারী হা/৪১২১)। নিহতদের সংখ্যা নিয়ে বিদ্বানগণ মতভেদ করেছেন। ইবনু ইসহাক ৬০০, ক্বাতাদাহ ৭০০ ও সুহায়লী ৮০০ থেকে ৯০০-এর মধ্যে বলেছেন। পক্ষান্তরে জাবের (রাঃ) বর্ণিত সহীহ হাদীছ সমূহে ৪০০ বর্ণিত হয়েছে (তিরমিযী হা/১৫৮২ ও অন্যান্য)। এর সমন্বয় করতে গিয়ে ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, সম্ভবতঃ ৪০০ জন ছিল যোদ্ধা। বাকীরা ছিল তাদের সহযোগী’ (বুখারী, ফাৎহুল বারী হা/৪১২২-এর আলোচনা)। যদি তারা ফায়ছালার দায়িত্ব রাসূল (সাঃ)-কে দিত, তাহলে হয়ত পূর্বেকার দুই গোত্রের ন্যায় তাদেরও নির্বাসন দন্ড হত। অতঃপর তাদের কয়েদী ও শিশুদের নাজদে নিয়ে বিক্রি করে তার বিনিময়ে ঘোড়া ও অস্ত্র-শস্ত্র খরীদ করা হয়। অবরোধ কালে মুসলিম পক্ষে খাল্লাদ বিন সুওয়াইদ (خَلاَّد بن سُوَيْد) শহীদ হন এবং উক্কাশার ভাই আবু সিনান বিন মিহছান(أبو سنان بن مِحْصَن) স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করেন। তাঁকে বনু কুরাইজার গোরস্থানে দাফন করা হয়। উপর থেকে চাক্কি ফেলে খাল্লাদকে হত্যা করার অপরাধে বনু কুরাইজার একজন মহিলাকে হত্যা করা হয়। উক্ত মহিলা ব্যতীত কোন নারী বা শিশুকে হত্যা করা হয়নি।[ইবনু হিশাম ২/২৪২; সনদ সহীহ] সা‘দ বিন মু‘আয (রাঃ)-এর ফায়ছালা অনুযায়ী বনু নাজ্জার-এর বিনতুল হারেছ-এর বাগানে কয়েকটি গর্ত খুঁড়ে সেখানে খন্ড খন্ড দলে নিয়ে বনু কুরাইজার বিশ্বাসঘাতকদের হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়। যার উপরে এখন মদীনার মার্কেট তৈরী হয়েছে (ইবনু হিশাম ২/২৪০-৪১)। বনু কুরাইজার আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের পূর্বেই তাদের কিছু লোক ইসলাম কবুল করেছিল। কেউ কেউ দুর্গ থেকে বেরিয়েও এসেছিল। তাদের জীবন ও সম্পদ নিরাপদ থাকে। এতদ্ব্যতীত ‘আত্বিয়া কুরাযীর (عَطِيَّةُ الْقُرَظِيُّ) নাভির নিম্নদেশের লোম না গজানোর কারণে তিনি বেঁচে যান ও পরে সাহাবী হবার সৌভাগ্য লাভ করেন। এভাবে কাছীর বিন সায়েবও বেঁচে যান।[1] সাবেত বিন ক্বায়েস (রাঃ) রাসূল (সাঃ)-এর নিকট বৃদ্ধ ইহূদী নেতা যুবায়ের বিন বাত্বা আল-কুরাযী(الزُّبَيرُ بنُ بَاطَا الْقُرَظِيُّ) এবং তার পরিবার ও মাল-সম্পদ তাকে ‘হেবা’ করার জন্য আবেদন করেন। কারণ যুবায়ের সাবেতের উপর জাহেলী যুগে কিছু অনুগ্রহ করেছিল। তখন সাবেত বিন ক্বায়েস যুবায়েরকে বললেন, রাসূল (সাঃ) তোমাকে তোমার পরিবার ও মাল-সম্পদসহ আমার জন্য ‘হেবা’ করেছেন। এখন এগুলি সবই তোমার। অতঃপর যখন যুবায়ের জানতে পারল যে, তার সম্প্রদায়ের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। তখন সে বলল, হে সাবেত! তুমি আমাকে আমার বন্ধুদের সাথে মিলিয়ে দাও। তখন তাকে হত্যা করা হল এবং তার নিহত ইহূদী বন্ধুদের সাথে তাকে মিলিয়ে দেওয়া হল।[আর-রাহীক্ব ৩১৭ পৃঃ; ইবনু হিশাম ২/২৪২-৪৩] যুবায়ের-পুত্র আব্দুর রহমান নাবালক হওয়ার কারণে বেঁচে যান। অতঃপর তিনি ইসলাম কবুল করেন

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...