in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
ওহুদ যুদ্ধ শুরু সম্পর্কে কিছু লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
৩য় হিজরীর ৭ই শাওয়াল শনিবার সকালে যুদ্ধ শুরু হয়। সে যুগের রীতি অনুযায়ী কুরায়েশ বাহিনীর পতাকাবাহী এবং তাদের সেরা অশ্বারোহী বীরদের অন্যতম তালহা বিন আবু তালহা আব্দুল্লাহ আল-আবদারী উটে সওয়ার হয়ে এসে প্রথমে দ্বৈরথ যুদ্ধে মুকাবিলার আহবান জানান। মুসলিম বাহিনীর বামবাহুর প্রধান যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম (রাঃ) তার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এগিয়ে যান এবং সিংহের ন্যায় এক লাফে উটের পিঠে উঠে তাকে সেখান থেকে মাটিতে ফেলে যবেহ করে হত্যা করেন। এ অভাবনীয় দৃশ্য দেখে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ও সাহাবীগণ খুশীতে তাকবীর ধ্বনি করেন।[1] প্রধান পতাকাবাহীর পতনের পর তার পরিবারের আরও পাঁচ জন পরপর নিহত হয় এবং এভাবে দশ/বারো জন পতাকাবাহী মুসলিম বাহিনীর হাতে খতম হয়। যার মধ্যে একা কুযমান ৪ জনকে এবং আলী (রাঃ) ৮ জনকে হত্যা করেন। আউস গোত্রের বনু যাফর(بنو ظَفَر) বংশের কুযমান(قُزْمَان) ইবনুল হারেছ ছিল একজন মুনাফিক। সে এসেছিল নিজ বংশের গৌরব রক্ষার্থে, ইসলামের স্বার্থে নয়। মাক্কী বাহিনীর পতাকাবাহীরা একে একে নিহত হওয়ার পর মুসলিম সেনাদল বীরদর্পে এগিয়ে যান ও মুশরিকদের সঙ্গে হাতাহাতি লড়াই শুরু হয়ে যায়। এই সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সকলকে আহবান করে বলেন,مَنْ يَأْخُذُ مِنِّى هَذَا؟ ‘কে আছ আমার এই তরবারি গ্রহণ করবে’? তখন সকলে আমি আমি বলে একযোগে এগিয়ে এলেন তরবারি নেবার জন্য। অতঃপর রাসূল (সাঃ) বললেন,فَمَنْ يَأْخُذُهُ بِحَقِّهِ ‘কে এটির হক সহ গ্রহণ করবে’? তখন লোকেরা ভিড় করল। এ সময় আবু দুজানাহ সিমাক বিন খারাশাহ(أَبُو دُجَانَةَ سِمَاكُ بْنُ خَرَشَةَ) বলে উঠলেন,أَنَا آخُذُهُ بِحَقِّهِ ‘আমি একে তার হক সহ গ্রহণ করব’। তখন রাসূল (সাঃ) তাকে তরবারিটি প্রদান করেন। অতঃপর তিনি মুশরিকদের মাথা বিদীর্ণ করতে লাগলেন’।[মুসলিম হা/২৪৭০; ইবনু হিশাম ২/৬৬] এই যুদ্ধে হযরত হামযাহ বিন আব্দুল মুত্ত্বালিবের বীরত্ব ছিল কিংবদন্তীতুল্য। প্রতিপক্ষের মধ্যভাগে প্রবেশ করে তিনি সিংহ বিক্রমে লড়াই করছিলেন। তাঁর অস্ত্রচালনার সামনে শত্রুপক্ষের কেউ টিকতে না পেরে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। কিন্তু আল্লাহর এই সিংহকে কাপুরুষের মত গোপন হত্যার মাধ্যমে শহীদ করা হয়। তাকে হত্যাকারী ওয়াহ্শী বিন হারব ছিল মক্কার নেতা জুবায়ের বিন মুত্ব‘ইমের হাবশী গোলাম। যার চাচা তু‘আইমা বিন ‘আদী বদর যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। ওয়াহ্শী ছিল বর্শা নিক্ষেপে পারদর্শী, যা সাধারণতঃ লক্ষ্যভ্রষ্ট হত না। মনিব তাকে বলেছিল, তুমি আমার চাচা হত্যার বিনিময়ে যদি মুহাম্মাদের চাচা হামযাকে হত্যা করতে পার, তাহলে তুমি মুক্ত হয়ে যাবে’। ওয়াহশী বলেন যে, আমি কেবল আমার নিজের মুক্তির স্বার্থেই যুদ্ধে আসি এবং সর্বক্ষণ কেবল হামযার পিছনে লেগে থাকি। আমি একটি বৃক্ষ বা একটি পাথরের পিছনে ওঁৎ পেতে ছিলাম। ইতিমধ্যে যখন তিনি আমার সম্মুখে জনৈক মুশরিক সেনাকে এক আঘাতে দ্বিখন্ডিত করে ফেলেন এবং তাকে আমার আওতার মধ্যে পেয়ে যাই, তখনই আমি তাঁর অগোচরে তাঁর দিকে বর্শাটি ছুঁড়ে মারি, যা তাঁর নাভীর নীচ থেকে ভেদ করে ওপারে চলে যায়। তিনি আমার দিকে তেড়ে আসেন। কিন্তু পড়ে যান ও কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। আমি তাঁর দেহ থেকে বর্শাটি বের করে নিয়ে চলে আসি। এরপর মক্কায় ফিরে গেলে আমাকে আযাদ করে দেওয়া হয়।[বুখারী হা/৪০৭২; ইবনু হিশাম ২/৭১-৭২] উল্লেখ্য যে, মক্কা বিজয়ের পর ওয়াহ্শী ত্বায়েফে পালিয়ে যান। অতঃপর সেখানকার প্রতিনিধি দলের সাথে ৯ম হিজরী সনে মদীনায় এসে রাসূল (সাঃ)-এর নিকট ইসলাম কবুল করেন। রাসূল (সাঃ) তাকে ভবিষ্যতে পুনরায় সামনে আসতে নিষেধ করেন। ফলে তিনি রাসূল (সাঃ)-এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর কখনো মদীনায় আসেননি। আবুবকর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে ভন্ডনবী মুসায়লামা কাযযাবকে ইয়ামামার যুদ্ধে ঐ বর্শা দিয়েই তিনি হত্যা করেন এবং বলেন, فَإِنْ كُنْتُ قَتَلْتَهُ، فَقَدْ قَتَلْتُ خَيْرَ النَّاسِ بَعْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَدْ قَتَلْتُ شَرَّ النَّاسِ ‘যদি আমি তাকে হত্যা করে থাকি, তবে আমি রাসূল (সাঃ)-এর পরে শ্রেষ্ঠ মানুষটিকে হত্যা করেছিলাম। আর এখন আমি নিকৃষ্টতম মানুষটিকে হত্যা করলাম’।[ইবনু হিশাম ২/৭২-৭৩; ফাৎহুল বারী হা/৪০৭২] রোমকদের বিরুদ্ধে ইয়ারমূকের যুদ্ধেও তিনি শরীক হন। তিনি উসমান (রাঃ) অথবা আমীর মু‘আবিয়ার খেলাফতকালে ইরাকের হিমছে বসবাস করেন ও সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন’ (আল-ইছাবাহ ক্রমিক সংখ্যা ৯১১৫)। ‘সাইয়িদুশ শুহাদা’ হযরত হামযা বিন আব্দুল মুত্ত্বালিব শহীদ হওয়ার আগ পর্যন্ত ওহুদ যুদ্ধে তিনি একাই ৩০

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...