in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
বদর যুদ্ধ পর্যালোচনা সম্পর্কে লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
এই যুদ্ধ পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না। বরং আল্লাহর দূরদর্শী পরিকল্পনায় ও বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সুনিপূণভাবে সংঘটিত হয় ও বিজয় লাভ হয়। যা পরবর্তী ইসলামী বিজয়ের ভিত্তি হিসাবে পরিগণিত হয়। কারণ ঐদিন মুসলমানরা ছিল নিতান্তই দুর্বল ও কাফেররা ছিল সবল। যেমন আল্লাহ বলেন, وَلَقَدْ نَصَرَكُمُ اللهُ بِبَدْرٍ وَأَنْتُمْ أَذِلَّةٌ فَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ‘আর আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেছিলেন বদরের যুদ্ধে। যেদিন তোমরা দুর্বল ছিলে। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পার’ (আলে ইমরান ৩/১২৩)। এমনকি মুসলমানরা যুদ্ধ করবে, না মদীনায় ফিরে যাবে, এ বিষয়েও ছিল পরামর্শ সভায় মতভেদ। পরে আল্লাহর নির্দেশে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয় ও তাঁর বিশেষ অনুগ্রহে এ যুদ্ধে বিজয় লাভ হয়। যেমন আল্লাহ বলেন, إِذْ أَنْتُمْ بِالْعُدْوَةِ الدُّنْيَا وَهُمْ بِالْعُدْوَةِ الْقُصْوَى وَالرَّكْبُ أَسْفَلَ مِنْكُمْ وَلَوْ تَوَاعَدْتُمْ لَاخْتَلَفْتُمْ فِي الْمِيعَادِ وَلَكِنْ لِيَقْضِيَ اللهُ أَمْرًا كَانَ مَفْعُولاً لِيَهْلِكَ مَنْ هَلَكَ عَنْ بَيِّنَةٍ وَيَحْيَى مَنْ حَيَّ عَنْ بَيِّنَةٍ وَإِنَّ اللهَ لَسَمِيعٌ عَلِيمٌ ‘স্মরণ কর, যখন তোমরা (মদীনার) নিকট প্রান্তে ছিলে এবং কাফের বাহিনী ছিল দূরপ্রান্তে। আর (আবু সুফিয়ানের ব্যবসায়ী) কাফেলা ছিল তোমাদের নিম্ন ভূমিতে। যদি তোমরা আগে থেকে যুদ্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চাইতে, তাহলে (সংখ্যায় অল্প হওয়ার কারণে) তোমরা সে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় মতবিরোধ করতে। কিন্তু আল্লাহ (উভয় দলকে যুদ্ধে সমবেত করার) এমন একটি কাজ সম্পন্ন করতে চেয়েছিলেন, যা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। এটা এজন্য যাতে যে ধ্বংস হবে সে যেন (ইসলামের) সত্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ধ্বংস হয় এবং যে বেঁচে থাকবে, সে যেন সত্য প্রতিষ্ঠার পর বেঁচে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’ (আনফাল ৮/৪২)। উক্ত আয়াতে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, বদরের যুদ্ধ আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-এর কোন পরিকল্পিত বিজয়াভিযান ছিল না। জানা আবশ্যক যে, আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-এর জীবনে প্রায় সকল যুদ্ধই ছিল আত্মরক্ষামূলক কিংবা প্রতিরোধমূলক। কাফির-মুশরিক ও মুনাফিকদের অবিরাম ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও হামলা মুকাবিলা করতে গিয়েই তাঁকে যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয়েছিল। কুরআনী বর্ণনা : ━━━━━━━━━ বদর যুদ্ধ বিষয়ে সূরা আনফাল নাযিল হয়। যার মধ্যে ১-৪৯ পর্যন্ত আয়াতগুলি কেবল বদর যুদ্ধ সম্পর্কেই নাযিল হয়েছে। উক্ত সূরার ১ ও ৪১ আয়াতে গণীমত বণ্টনের নীতিমালা বর্ণিত হয়। তাছাড়া সেখানে মুসলমানদের দুর্বলতা এবং আল্লাহর গায়েবী মদদের কথা যেমন বর্ণিত হয়েছে, তেমনি উক্ত যুদ্ধের মহৎ উদ্দেশ্যের কথাও বর্ণিত হয়েছে। যার দ্বারা জাহেলী যুগের যুদ্ধের সাথে এ যুদ্ধের পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে যায়। সেখানে যুদ্ধবন্দী বিষয়ক নীতি, চুক্তিবদ্ধ গোষ্ঠী ও চুক্তি বহির্ভূত মুমিনদের সাথে ব্যবহার বিধি যেমন বর্ণিত হয়েছে, তেমনি ইসলাম যে কেবল একটি বিশ্বাসের নাম নয়, বরং একটি বাস্তব রীতি-নীতি সমৃদ্ধ সমাজ দর্শনের নাম, সেটাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। উক্ত সূরায় আল্লাহ মুসলমানদের প্রতি তাঁর বিশেষ অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, وَاذْكُرُوْا إِذْ أَنْتُمْ قَلِيْلٌ مُّسْتَضْعَفُوْنَ فِي الأَرْضِ تَخَافُوْنَ أَنْ يَّتَخَطَّفَكُمُ النَّاسُ فَآوَاكُمْ وَأَيَّدَكُمْ بِنَصْرِهِ وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ- (الأنفال ২৬)- ‘আর স্মরণ কর যখন তোমরা ছিলে সংখ্যায় অল্প ও পৃথিবীতে তোমরা দুর্বল বলে গণ্য হতে। আর তোমরা আশংকা করতে যে, লোকেরা তোমাদের যেকোন সময়ে উঠিয়ে নিয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের আশ্রয় দেন ও তোমাদেরকে নিজ সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করেন। আর তোমাদেরকে উত্তম বস্ত্ত সমূহ জীবিকারূপে দান করেন, যাতে তোমরা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হও’ (আনফাল ৮/২৬)। বদর যুদ্ধের গুরুত্ব : ━━━━━━━━━━━ (১) এটাই ছিল মুসলমানদের সাথে মুশরিকদের সর্বপ্রথম ব্যাপকভিত্তিক সশস্ত্র সংঘর্ষ। (২) এটি ছিল ইসলামের টিকে থাকা না থাকার ফায়ছালাকারী যুদ্ধ (৩) এটি ছিল হক ও বাতিলের পার্থক্যকারী। সেকারণ এ যুদ্ধের দিনটিকে পবিত্র কুরআনে ‘ইয়াওমুল ফুরক্বান’ (يَوْمُ الْفُرْقَانِ) বা কুফর ও ইসলামের মধ্যে ‘ফায়ছালাকারী দিন’ (আনফাল ৮/৪১) বলে অভিহিত করা হয়েছে। (৪) বদরের এ দিনটিকে আল্লাহ স্মরণীয় হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, وَلَقَدْ نَصَرَكُمُ اللهُ بِبَدْرٍ وَأَنْتُمْ أَذِلَّةٌ فَاتَّقُوْا اللهَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...