গাযওয়ায়ে বানী নাধির (বা বানু নাধির যুদ্ধ) ৬২৫ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়েছিল। এর পেছনে মূলত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণ ছিল, যা মদিনার ইহুদি গোত্র বানু নাধিরের বিশ্বাসঘাতকতার সাথে সম্পর্কিত। মূল কারণগুলো ছিল:
1. বিশ্বাসঘাতকতা: বানু নাধির ছিল মদিনার একটি প্রভাবশালী ইহুদি গোত্র, যারা মুসলমানদের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী, তারা মদিনার অন্যান্য অধিবাসীদের মতো মুসলিমদের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে এবং কোনো আক্রমণ বা ষড়যন্ত্রে জড়াবে না। কিন্তু তারা গোপনে নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে, যা মুসলমানদের বিরুদ্ধে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল ছিল। এই ষড়যন্ত্র ধরা পড়ার পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
2. মক্কার কুরাইশদের সাথে যোগাযোগ: বানু নাধির মক্কার কুরাইশদের সাথে গোপন যোগাযোগ বজায় রেখেছিল এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। তারা কুরাইশদের সমর্থন নিয়ে মদিনার মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে চেয়েছিল, যা চুক্তিভঙ্গের আরেকটি উদাহরণ।
3. কৌশলগত হুমকি: বানু নাধির মদিনার আশেপাশে একটি কৌশলগত অবস্থানে ছিল, যা মুসলমানদের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তাদের বিশ্বাসঘাতকতা ও কুরাইশদের সাথে জোটবদ্ধতা মদিনার নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল। নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং মুসলমানরা যদি তাদের এই বিশ্বাসঘাতকতা উপেক্ষা করতেন, তাহলে মদিনার স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত।
4. চুক্তি লঙ্ঘন: নবী (সা.) বানু নাধিরের সাথে করা চুক্তি রক্ষা করার জন্য তাদেরকে বিশ্বাসঘাতকতা থেকে বিরত থাকার সুযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা চুক্তি লঙ্ঘন করে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যেতে থাকে। এর ফলে নবী (সা.) তাদেরকে মদিনা থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেন।
এই কারণগুলো একত্রিত হয়ে গাযওয়ায়ে বানী নাধিরের পেছনে প্রাথমিক প্রভাবক হিসেবে কাজ করে, যেখানে মুসলমানরা তাদের বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিক্রিয়ায় সামরিক অভিযান চালায়।