আব্দুল্লাহ বিন উবাই, মদিনার মুনাফিকদের সরদার, নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা পোষণের কিছু প্রধান কারণ ছিল:
১. ঈর্ষা ও ক্ষমতার ক্ষতি:
আব্দুল্লাহ বিন উবাই ইসলাম গ্রহণের আগে মদিনার একজন প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। যখন নবী মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় হিজরত করে সেখানে ইসলামের প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তার ক্ষমতা এবং প্রভাব কমতে শুরু করে। এটি তাকে হতাশ এবং ঈর্ষান্বিত করে তোলে।
২. মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে বিভাজন:
নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নেতৃত্বে মুহাজির (মক্কা থেকে হিজরত করা মুসলমান) এবং আনসার (মদিনার স্থানীয় মুসলমান) এর মধ্যে সহযোগিতা ও একতা প্রতিষ্ঠিত হয়। আব্দুল্লাহ বিন উবাই এই একতার বিরুদ্ধে কাজ করেন এবং বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করেন। তিনি মনে করতেন যে, মুসলমানদের মধ্যে এই বন্ধন তার ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে।
৩. ধর্মীয় দ্বন্দ্ব:
ইসলামের মূল নীতিগুলি এবং নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর বার্তা তার মুনাফিকত্বের প্রতি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছিল। তিনি ইসলামের শিক্ষা এবং নবীর নেতৃত্বের প্রতি গভীর বিদ্বেষ পোষণ করতেন, যা তার মুনাফিক আচরণকে আরো প্রবল করে তুলেছিল।
৪. অপবাদ রটনা:
হযরত আয়েশা (রা.)-এর বিরুদ্ধে ইফক অপবাদে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এই অপবাদ ছড়িয়ে দিয়ে তিনি নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন, যা তার ঘৃণা এবং বিদ্বেষের প্রকাশ।
৫. নিজস্ব স্বার্থের প্রতিফলন:
আব্দুল্লাহ বিন উবাই নিজেকে মুসলিম সমাজের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নেতৃত্বের কারণে তার এই স্বপ্ন ভেঙে যায়, যা তাকে আরো ক্ষুব্ধ এবং বিরোধী করে তোলে।
এই কারণগুলো আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের ঘৃণা এবং বিদ্বেষের মূল কারণ হিসেবে কাজ করেছে, যা মুসলমানদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা সৃষ্টি করেছিল।