মহাবিশ্ব হলো একটি বিশাল ও জটিল কাঠামো, যা অসংখ্য উপাদান দ্বারা গঠিত। এটির প্রধান উপাদানগুলো হলো:
১. দৃশ্যমান পদার্থ (Baryonic Matter):
এটি আমাদের চারপাশে যা কিছু দেখা যায়, যেমন তারা, গ্রহ, গ্যাস, ধূলিকণা ইত্যাদি। এই পদার্থগুলোর মূল উপাদান হলো:
পরমাণু: হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম মহাবিশ্বের প্রধান দুই উপাদান। হাইড্রোজেন সবচেয়ে বেশি পরিমাণে রয়েছে, যা মহাবিশ্বের প্রায় ৭৫% এবং হিলিয়াম প্রায় ২৪%। বাকি ১% অন্যান্য ভারী মৌল যেমন কার্বন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ইত্যাদি।
২. ডার্ক ম্যাটার (Dark Matter):
মহাবিশ্বের ৮৪% বস্তু ডার্ক ম্যাটার হিসেবে ধারণা করা হয়, যা সরাসরি দেখা যায় না। এটি কোনো আলো শোষণ বা নির্গত করে না, তবে এর মহাকর্ষীয় প্রভাবের মাধ্যমে এর অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। ডার্ক ম্যাটার গ্যালাক্সি ও তারাদের গঠনে সহায়তা করে এবং তাদের একত্রে ধরে রাখে।
৩. ডার্ক এনার্জি (Dark Energy):
মহাবিশ্বের ৭০% এর বেশি জুড়ে ডার্ক এনার্জি রয়েছে। এটি মহাবিশ্বের প্রসারণের মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। ডার্ক এনার্জি মহাবিশ্বের প্রসারণকে ত্বরান্বিত করছে, এবং এর প্রভাব আমাদের বোঝার বাইরে হলেও এটি মহাবিশ্বের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. অ্যান্টিম্যাটার (Antimatter):
অ্যান্টিম্যাটার হলো পদার্থের বিপরীত কণা। যখন অ্যান্টিম্যাটার ও পদার্থ একত্রিত হয়, তখন প্রচুর পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়। যদিও মহাবিশ্বে এর পরিমাণ খুব কম, এটি পদার্থের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
৫. ফোটন ও নিউট্রিনো (Photon & Neutrino):
ফোটন হলো আলো কণা যা মহাবিশ্বে শক্তি বহন করে। নিউট্রিনো হলো খুবই হালকা কণা যা প্রচুর পরিমাণে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে এবং সাধারণত অন্যান্য পদার্থের সাথে খুব কমই যোগাযোগ করে।
৬. শূন্যস্থান (Space or Vacuum):
মহাবিশ্বের বেশিরভাগ অংশই শূন্যস্থানে পরিপূর্ণ, যেখানে কোনো বস্তু নেই। এটি কার্যত শূন্য শক্তিসম্পন্ন, কিন্তু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এতে ছোট পরিমাণ শক্তি থাকতে পারে।
মোটকথা, মহাবিশ্বের গঠন উপাদান খুব জটিল এবং এর বেশিরভাগ অংশ আমাদের সরাসরি বোঝার বাইরে, বিশেষ করে ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির মতো উপাদান।