বায়ুপরাগী ফুলের (anemophilous flowers) বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
1. ফুলের আকৃতি ও গঠন:
বায়ুপরাগী ফুলগুলো সাধারণত ছোট, আকর্ষণহীন ও গন্ধহীন হয়। কারণ এগুলোতে পোকামাকড়কে আকর্ষণ করার প্রয়োজন নেই। অনেক সময় পাপড়ি খুবই ক্ষুদ্র বা অনুপস্থিত থাকে।
2. পরাগের পরিমাণ:
এই ফুলগুলো প্রচুর পরিমাণে পরাগ উৎপন্ন করে। কারণ, বায়ুর মাধ্যমে পরাগ ছড়ানোর সময় অনেক পরাগ ব্যর্থ হয় এবং দূরবর্তী গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। অতিরিক্ত পরাগ উৎপন্ন করার মাধ্যমে পরাগায়নের সফলতা বৃদ্ধি পায়।
3. পরাগের ধরন:
পরাগগুলো হালকা, মসৃণ ও শুষ্ক হয় যাতে সহজেই বাতাসে ভেসে যেতে পারে। হালকা পরাগ বাতাসে দীর্ঘ সময় ধরে ভেসে থাকে এবং বড় দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।
4. পুংকেশরের অবস্থান:
পুংকেশর সাধারণত ফুলের বাইরে অবস্থান করে, যাতে বাতাস সহজেই পরাগ কণাগুলোকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে।
5. গর্ভকেশরের গঠন:
গর্ভকেশর সাধারণত লম্বা এবং ফুলের বাইরে থাকে। এতে পরাগ কণা সহজে গর্ভকেশরে পৌঁছাতে পারে।
6. নেক্টার বা সুগন্ধের অনুপস্থিতি:
বায়ুপরাগী ফুলে সাধারণত নেক্টার বা মধু থাকে না, কারণ পরাগায়নের জন্য কীটপতঙ্গের প্রয়োজন হয় না। এদের ফুলে আকর্ষণীয় গন্ধও থাকে না।
7. পরিবেশের প্রভাব:
বায়ুপরাগী ফুলগুলো সাধারণত খোলা স্থান বা মাঠে জন্মায়, যেখানে বাতাসের গতিশীলতা বেশি থাকে। এগুলো গাছের উচ্চ স্থানেও থাকতে পারে যাতে বাতাসের প্রবাহ সহজ হয়।
উদাহরণ:
গম, ধান, ভুট্টা, নারকেল, পাইন গাছ প্রভৃতি বায়ুপরাগী ফুলের উদাহরণ।