in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর দেহ সৌষ্ঠব সম্পর্কে কিছু লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর দেহাবয়ব ছিল (১) মধ্যম গড়নের অতীব সুন্দর ও সুঠাম এবং গায়ের রং ছিল উজ্জ্বল ও গৌর-গোলাপী।[বুখারী হা/৩৫৪৭; মুসলিম হা/২৩৪০, ২৩৪৭] (২) প্রশস্ত মুখমন্ডল এবং ঘন পাপড়িযুক্ত কিঞ্চিত রক্তাভ পটলচেরা সুরমা চক্ষু।[মুসলিম হা/২৩৩৯; মিশকাত হা/৫৭৮৪। জাবের (রাঃ) হতে। বায়হাক্বী, সহীহুল জামে‘ হা/৪৬২১। আলী (রাঃ) হতে] (৩) দীর্ঘ গ্রীবাবিশিষ্ট বড় আকৃতির মাথা।[তিরমিযী হা/৩৬৩৭, মিশকাত হা/৫৭৯০] যা ছিল ঘনকৃষ্ণ কেশশোভিত। যা না অধিক কোঁকড়ানো, না অধিক খাড়া।[বুখারী হা/৩৫৪৭; মুসলিম হা/২৩৪৭] যা বাবরী ছিল।[মুসলিম হা/২৩৩৮, মিশকাত হা/৫৭৮২] (৪) মৃত্যু অবধি মাথার মাঝখানের কিছু চুল, ঠোটের নিম্ন দেশের এবং চোখ ও কানের মধ্যবর্তী দাড়ির ও কানের মধ্যকার কিছু চুল শ্বেতবর্ণ ধারণ করেছিল।[বুখারী হা/৩৫৪৫, মুসলিম হা/২৩৪১] সেকারণ তিনি চুলে খেযাব লাগাতেন না (আহমাদ হা/১৩৩৯৬)। আনাস (রাঃ) বলেন, মৃত্যুকালে রাসূল (সাঃ)-এর চুল ও দাড়ির বিশটি চুলও পাকেনি’।[বুখারী হা/৩৫৪৭; মুসলিম হা/২৩৪৭] তিনি নিয়মিত চিরুনী ব্যবহার করতেন এবং মাথার চুল দু’দিকে ভাগ করে দিতেন (তাতে মাঝখানে সিঁথি হয়ে যেত)[বুখারী হা/৩৫৫৮; মুসলিম হা/২৩৩৬] (৫) গোফ ছোট ও দাড়ি ছিল দীর্ঘ ও ঘন সন্নিবেশিত।[মুসলিম হা/২৩৪৪; মিশকাত হা/৫৭৭৯] (৬) তিনি ছিলেন প্রশস্ত কাঁধ বিশিষ্ট।[বুখারী হা/৩৫৫১, মুসলিম হা/২৩৩৭, মিশকাত হা/৫৭৮৩] যার বাম স্কন্ধমূলে ছিল কবুতরের ডিম্বাকৃতির ছোট্ট গোশতপিন্ড, যা ‘মোহরে নবুঅত’ বলে খ্যাত। যা ছিল গাত্রবর্ণ থেকে পৃথক সবুজ বা কালচে চর্মতিল সমষ্টি।[মুসলিম হা/২৩৪৪, ২৩৪৬, মিশকাত হা/৫৭৮০] (৭) প্রসারিত বক্ষপুট হতে নাভিদেশ পর্যন্ত ছিল স্বল্প লোমের প্রলম্বিত রেখা।[তিরমিযী হা/৩৬৩৭, মিশকাত হা/৫৭৯০] (৮) দেহের জোড় সমূহ ছিল বড় আকারের এবং পায়ের পাতা ও হস্ত তালুদ্বয় ছিল মাংসল।[তিরমিযী হা/৩৬৩৭, মিশকাত হা/৫৭৯০] (৯) এছাড়া হাতের তালুদ্বয় ছিল প্রশস্ত ও মোলায়েম।(বুখারী হা/৩৫৬১, ৫৯০৭) আর পায়ের গোড়ালি ছিল পাতলা (মুসলিম হা/২৩৩৯)। চলার সময় সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে চলতেন। যেন কোন ঢালু স্থানে অবতরণ করছেন।[মুসলিম হা/২৩৩০; মিশকাত হা/৫৭৮৭, ৫৭৯০] (১১) দেহ নিঃসৃত স্বেদবিন্দু সমূহ মুক্তার ন্যায় পরিদৃষ্ট হত। যা ছিল মিশকে আম্বরের চাইতে সুগন্ধিময়।[1] (১২) প্রফুল্ল অবস্থায় তাঁর মুখমন্ডল চন্দ্রের ন্যায় চমকিত হত।[বুখারী হা/৩৫৫৬, মুসলিম হা/২৭৬৯, মিশকাত হা/৫৭৯৮] রাগান্বিত হলে তাঁর চেহারার গন্ডদ্বয় ডালিমের ন্যায় রক্তিম বর্ণ ধারণ করত (তিরমিযী হা/২১৩৩, মিশকাত হা/৯৮)। (১৩) শক্ত, সমর্থ ও শক্তিশালী দেহ সৌষ্ঠবের অধিকারী এই সুন্দর মানুষটির দেহ বৃদ্ধ বয়সে কিছুটা ভারি হয়ে গিয়েছিল (মুসলিম হা/৭৩২, মিশকাত হা/১১৯৮)। (ক) রাসূল (সাঃ)-এর সুন্দর চেহারার প্রশংসায় আবুবকর ছিদ্দীক (রাঃ) বলতেন, أَمِينٌ مُصْطَفًى لِلْخَيْرِ يَدْعُو + كَضَوْءِ الْبَدْرِ زَايَلَهُ الظَّلاَمُ ‘বিশ্বস্ত, মনোনীত, কল্যাণের দিকে যিনি সদা আহবান করেন। পূর্ণচন্দ্রের জ্যোতির ন্যায় যা অন্ধকার দূরীভূত করে’।[বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুঅত হা/২৩৮, ১/২৭০ পৃঃ] (খ) উমর ফারূক (রাঃ) রাসূল (সাঃ)-এর চেহারা দেখে মু‘আল্লাক্বাখ্যাত জাহেলী কবি যুহায়ের বিন আবু সুলমার নিম্নোক্ত কবিতা পাঠ করতেন, যা কবি তার নেতা হারাম বিন সেনানের প্রশংসায় বলেছিলেন।- لَوْ كُنْتَ مِنْ شَيْءٍ سِوَى بَشَرٍ + كُنْتَ الْمُضِيَّ لِلَيْلَةِ الْبَدْرِ ‘যদি আপনি মানুষ ব্যতীত অন্য কিছু হতেন, তাহলে আপনিই পূর্ণিমার রাত্রির জন্য আলো দানকারী হতেন’।[বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুঅত ১/৩০১; কানযুল ‘উম্মাল হা/১৮৫৭০] (গ) কা‘ব বিন মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন আনন্দিত হতেন, তখন তাঁর চেহারা উজ্জ্বল হয়ে যেন চন্দ্রের টুকরা (قِطْعَةُ قَمَرٍ) হয়ে যেত’।[বুখারী হা/৩৫৫৬; মিশকাত হা/৫৭৯৮] (ঘ) হযরত আলী (রাঃ) এবং অন্যান্য প্রশংসাকারীর ভাষায় রাসূল (সাঃ) ছিলেন, لَمْ أَرَ قَبْلَهُ وَلاَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘তাঁর পূর্বে ও পরে তাঁর ন্যায় সুন্দর কাউকে আমি দেখিনি’।[2] ফারসী কবির ভাষায়, حسن يوسف دم عيسى يد بيضا دارى + آنچہ خوبہ ہم دارند توتنها دارى ‘ইউসুফের রূপ, ঈসার ফুঁক ও মূসার শুভ্র তালু সবই আছে তোমার মাঝে হে প্রিয় রাসূল’।

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...