in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
মক্কা বিজয়ের গুরুত্ব লিখ

1 Answer

+1 vote
by
 
Best answer
৬ষ্ঠ হিজরীতে হোদায়বিয়াহর সন্ধিকে আল্লাহ ‘ফাতহুম মুবীন’ বা স্পষ্ট বিজয় অভিহিত করে যে আয়াত নাযিল করেছিলেন (ফাৎহ ৪৮/১), ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয় ছিল তার বাস্তব রূপ। প্রকৃত অর্থে মক্কা বিজয় ছিল কুফর ও ইসলামের মধ্যে ফায়ছালাকারী বিজয়, যা মুশরিক নেতাদের অহংকার চূর্ণ করে দেয় এবং মক্কা ও আরব উপদ্বীপ থেকে শিরক নিশ্চিহ্ন করে দেয়। যা অদ্যাবধি সেখানে আর ফিরে আসেনি। ইনশাআল্লাহ ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর ফিরে আসবে না। (২) মক্কা বিজয়ের ফলে মুসলমানদের শক্তিমত্তা এবং সেই সাথে রাসূল (সাঃ)-এর অতুলনীয় রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার খ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। যা সকলকে মাথা নত করতে বাধ্য করে। (৩) মক্কা বিজয়ের ফলে ইসলাম কবুলকারীর সংখ্যা বিপুল হারে বেড়ে যায়। ফলে মাত্র ১৯ দিন পরে হোনায়েন যুদ্ধে গমনের সময় মক্কা থেকেই নতুন দু’হাযার সৈন্য মুসলিম বাহিনীতে যুক্ত হয়। যাদের মধ্যে আবু সুফিয়ানসহ মক্কার বড় বড় নেতারা শামিল ছিলেন। যারা কিছুদিন আগেও ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। (৪) মক্কা বিজয়ের ফলে সমগ্র আরব উপদ্বীপের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব মুসলমানদের হাতে এসে যায়। যা এতদিন মক্কার মুশরিকদের একচ্ছত্র অধিকারে ছিল। (৫) মক্কা বিজয়ের ফলে আরব উপদ্বীপে মদীনার ইসলামী খেলাফত অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়। ফলে বাইরের পরাশক্তি ক্বায়ছার ও কিসরা তথা রোমক ও পারসিক শক্তি ব্যতীত তৎকালীন বিশ্বে মদীনার তুলনীয় কোন শক্তি আর অবশিষ্ট রইল না। রাসূল (সাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী উক্ত দুই পরাশক্তি খেলাফতে রাশেদাহর যুগে মুসলিম শক্তির নিকটে পর্যুদস্ত হয় এবং মদীনার ইসলামী খেলাফত একমাত্র বিশ্বশক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়। ফালিল্লা-হিল হাম্দ। মক্কা বিজয় থেকে প্রাপ্ত বিধান সমূহ : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ (১) রামাযান মাসে শুভ উদ্দেশ্যে সফরের সময় সিয়াম রাখা বা না রাখা দু’টিই জায়েয। যেমন এই সফরে রাসূল (সাঃ) সায়েম ছিলেন। কিন্তু পরে ভেঙ্গেছিলেন। আবার অনেকে সিয়াম ছিলেন না’ (মুসলিম হা/১১১৩-১৪)। (২) হালকাভাবে ৮ রাক‘আত ‘সালাতুয যোহা’ আদায় করা’ (বুখারী হা/৩৫৭; মুসলিম হা/৩৩৬)। তবে ইবনু কাছীর বলেন, এটি ছিল বিজয়োত্তর শুকরিয়ার সালাত, যা তিনি দুই দুই রাক‘আত করে পড়েছিলেন। পরে এটিই রীতি হয়ে যায়, যেমন সা‘দ ইবনু আবী ওয়াকক্বাছ মাদায়েন বিজয়ের দিন এটা পড়েন।[ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা নছর, ৮/৪৮২] (৩) মুসাফিরের জন্য সালাত ক্বছর করার মেয়াদ নির্ধারণ। যেমন রাসূল (সাঃ) মক্কায় ১৯ দিন অবস্থানকালে সালাতে ক্বছর করেছেন (বুখারী হা/৪২৯৮)। তবে সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় ১৯ দিনের বেশী হলেও ‘ক্বছর’ করা যায়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাবূক অভিযানের সময় সেখানে ২০ দিন যাবৎ ‘ক্বছর’ করেন।[সালাতুর রাসূল (সাঃ) ১৮৭ পৃঃ; মিরক্বাত ৩/২২১; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২১৩-১৪] (৪) কারু জন্য মহিলাদের আশ্রয় গ্রহণ সিদ্ধ। যেমন উম্মে হানী তাঁর দেবরদ্বয়ের জন্য আশ্রয় চেয়েছিলেন (বুখারী হা/৩৫৭; মুসলিম হা/৩৩৬ (৮২)। (৫) একদিনের জন্য হালাল করার পর মক্কায় রক্তপাত চিরদিনের জন্য হারাম করা হয় (বুখারী হা/২৪৩৪)। (৬) ‘মুৎ‘আ’ বিবাহ ক্বিয়ামত পর্যন্ত হারাম করা হয় (মুসলিম হা/১৪০৬ (২১)। (৭) যার বিছানায় সন্তান জন্মগ্রহণ করবে, সন্তানের পিতা সেই হবে (বুখারী হা/২০৫৩)। (৮) মুসলিম স্ত্রীর সাথে মুশরিক স্বামীর বিবাহ বহাল থাকবে, যদি স্বামী ইসলাম কবুল করেন। যেমন সাফওয়ান বিন উমাইয়া এবং ইকরিমা বিন আবু জাহলের বিবাহ বহাল রাখা হয়েছিল (ইবনু হিশাম ২/৪১৭-১৮)। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রায় ছয় বছর পর স্বীয় কন্যা যয়নবকে পূর্বের বিবাহের উপর মক্কা বিজয়ের কিছু পূর্বে তার নওমুসলিম স্বামী আবুল ‘আছের নিকট সমর্পণ করেন।[ইবনু হিশাম ১/৬৫৭; তিরমিযী হা/১১৪৩; আবুদাঊদ

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...