in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
নবী জীবনের শেষ অধ্যায় সম্পর্কে লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
হজ্জ থেকে ফিরে যিলহজ্জের বাকী দিনগুলিসহ ১১ হিজরীর মুহাররম ও ছফর পুরা দু’মাস রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মদীনায় অবস্থান করেন। বিদায় হজ্জের সময় আরাফাতের ময়দানে ইসলাম পরিপূর্ণ হওয়ার বিখ্যাত আয়াতটি (মায়েদাহ ৫/৩) নাযিল হয়। যা ছিল রাসূল (সাঃ)-এর মৃত্যুর ৮১ দিন পূর্বের ঘটনা। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, অতঃপর আইয়ামে তাশরীক্বের মধ্যবর্তী দিনে মিনায় ‘সূরা নছর’ নাযিল হয়। মৃত্যুর ৫০দিন পূর্বে নাযিল হয় কালালাহর বিখ্যাত আয়াতটি (নিসা ৪/১৭৬)। অতঃপর মৃত্যুর ৩৫ দিন পূর্বে নাযিল হয় সূরা তওবার সর্বশেষ দু’টি আয়াত- لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ، فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُلْ حَسْبِيَ اللهُ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ- ‘নিশ্চয় তোমাদের কাছে এসেছেন তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল, তোমাদের দুঃখ-কষ্ট যার উপরে কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল ও দয়ালু’। ‘এসত্ত্বেও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দাও যে, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তাঁর উপরেই আমি ভরসা করি। তিনি মহান আরশের অধিপতি’ (তওবা ৯/১২৮-১২৯)। অতঃপর মৃত্যুর ২১ দিন মতান্তরে ৭ দিন পূর্বে নাযিল হয় কুরআনের সর্বশেষ আয়াতটি- وَاتَّقُواْ يَوْماً تُرْجَعُوْنَ فِيْهِ إِلَى اللهِ ثُمَّ تُوَفَّى كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لاَ يُظْلَمُوْنَ- ‘আর তোমরা ভয় কর সেই দিনকে, যেদিন তোমরা পুনরায় ফিরে যাবে আল্লাহর কাছে। অতঃপর প্রত্যেকেই তার কর্মফল পুরোপুরি পাবে। আর তাদের প্রতি কোনরূপ অবিচার করা হবে না’ (বাক্বারাহ ২/২৮১; কুরতুবী, তাফসীর সূরা নছর)। বিদায়ের পূর্বলক্ষণ সমূহ : ━━━━━━━━━━━━━━━ মূলতঃ সূরা নছর নাযিলের পরেই আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বুঝতে পারেন যে, সত্বর তাঁকে আখেরাতে পাড়ি দিতে হবে। তখন থেকেই যেন তার অদৃশ্য প্রস্তুততি শুরু হয়ে যায়। যেমন- (১) আয়েশা (রাঃ) বলেন, সূরা নছর নাযিল হওয়ার পর থেকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এমন কোন সালাত আদায় করেননি, যেখানে রুকূ ও সিজদায় নিম্নের দো‘আটি পাঠ করতেন না।سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللَّهُمَّ اغْفِرْلِىْ ‘মহাপবিত্র তুমি হে আল্লাহ! আমাদের পালনকর্তা! তোমার জন্যই সকল প্রশংসা। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা কর’।[বুখারী হা/৭৯৪, মুসলিম/৪৮৪] ইমাম কুরতুবী বলেন,وقيل: الاستغفارُ تَعَبُّدٌ يَجِبُ إتْيَانَهُ، لاَ لِلْمَغْفِرَةِ، بَلْ تَعَبُّدًا ‘ক্ষমা প্রার্থনা হল দাসত্ব প্রকাশ করা, যা আল্লাহর নিকটে পেশ করা ওয়াজিব। এটি ক্ষমার জন্য নয় বরং অধিক দাসত্ব প্রকাশের জন্য’ (কুরতুবী, তাফসীর সূরা নছর)। (২) অন্যান্য বছর রামাযানের শেষে দশদিন ই‘তিকাফে থাকলেও ১০ম হিজরীর রামাযানে তিনি ২০ দিন ই‘তিকাফে থাকেন।[বুখারী হা/৪৯৯৮; মিশকাত হা/২০৯৯] (৩) অন্যান্য বছর জিব্রীল (আঃ) রামাযানে একবার সমস্ত কুরআন পেশ করলেও এ বছর সেটা দু’বার করেন। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি প্রিয় কন্যা ফাতেমাকে বলেন, আমার মৃত্যু খুব নিকটে মনে হচ্ছে’।[বুখারী হা/৬২৮৫; মুসলিম হা/২৪৫০] (৪) ১০ম হিজরীতে বিদায় হজ্জের ভাষণের শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি জানি না এ বছরের পর এই স্থানে তোমাদের সঙ্গে আর মিলিত হতে পারব কি-না’ (নাসাঈ হা/৩০৬২)। (৫) পরদিন মিনায় কুরবানীর দিনের ভাষণে জামরা আক্বাবায়ে কুবরায় তিনি বলেন, ‘আমার নিকট থেকে তোমরা হজ্জ ও কুরবানীর(خُذُوا عَنِّى مَنَاسِكَكُمْ) নিয়ম-কানূনগুলি শিখে নাও। কারণ এ বছরের পর হয়তবা আমার পক্ষে আর হজ্জ করা সম্ভব হবে না।[মুসলিম হা/১২৯৭ (৩১০); মিশকাত হা/২৬১৮] (৬) মৃত্যু সন্নিকটে বুঝতে পেরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একদিন ওহুদ প্রান্তে ‘শোহাদা কবরস্থানে’ গমন করেন এবং তাদের জন্য এমনভাবে দো‘আ করেন যেন তিনি জীবিত ও মৃত সকলের নিকট থেকে চির বিদায় গ্রহণ করছেন। রাবী ওক্ববা বিন ‘আমের (রাঃ) বলেন, আট বছর পরে রাসূল (সাঃ) এই যিয়ারত করেন মৃতদের নিকট থেকে জীবিতদের বিদায় গ্রহণকারীর ন্যায়(كَالْمُوَدِّعِ لِلأَحْيَاءِ وَالأَمْوَاتِ)।[বুখারী হা/৪০৪২; মুসলিম হা/২২৯৬] (৭) শোহাদা কবরস্থান যিয়ারত শেষে মদীনায় ফিরে তিনি মসজিদে নববীর মিম্বরে বসে সমবেত জনগণের উদ্দেশ্যে

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...