in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
নবী পরিবারে উত্তম আচরণ সম্পর্কে কিছু লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لأَهْلِهِ وَأَنَا خَيْرُكُمْ لأَهْلِى ‘তোমাদের মধ্যে সেই-ই উত্তম, যে তার পরিবারের নিকটে উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের নিকটে তোমাদের চেয়ে উত্তম’।[তিরমিযী হা/৩৮৯৫; মিশকাত হা/৩২৫২] এখানে পরিবার বলতে স্ত্রী বুঝানো হয়েছে। ‘সতীনের সংসার জাহান্নামের শামিল’ বলে একটা কথা সাধারণ্যে চালু আছে। কথাটি কমবেশী সত্য এবং বাস্তব। তবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে নিবেদিতপ্রাণ পরিবারে তা কিভাবে শান্তির বাহনে পরিণত হয়, রাসূল-পরিবার ছিল তার অনন্য দৃষ্টান্ত। অন্য সকল ক্ষেত্রের ন্যায় পারিবারিক জীবনেও আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ছিলেন উম্মতের জন্য উত্তম আদর্শ। কিছু দৃষ্টান্তের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আমরা নিম্নে তা তুলে ধরার চেষ্টা পাব।- ১. স্ত্রীগণের সাথে সমান ব্যবহার (تسوية السلوك مع الزوجات) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান সহ যাবতীয় আচার-আচরণে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাঁর সকল স্ত্রীর সঙ্গে সমান ব্যবহার করতেন। সাধারণতঃ আছর সালাতের পর তিনি প্রত্যেক স্ত্রীর ঘরে গিয়ে তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহ জেনে নিতেন।[বুখারী হা/৫২১৬; মুসলিম হা/১৪৭৪] ২. স্ত্রীদের পালা নির্ধারণ (القسم بين الزوجات) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ তিনি স্ত্রীদের মধ্যে তাদের সম্মতিক্রমে সমভাবে পালা নির্ধারণ করতেন।[1] তিনি বলতেন, কারু নিকট দু’জন স্ত্রী থাকলে যদি তাদের মধ্যে সে ন্যায় বিচার না করে, তাহলে ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি এক অঙ্গ পতিত অবস্থায় আগমন করবে’।[তিরমিযী হা/১১৪১; মিশকাত হা/৩২৩৬] ৩. সফরকালে লটারি করণ (القرعة عند السفر) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ কোন অভিযানে বা সফরে যাওয়ার সময় লটারীর মাধ্যমে স্ত্রী বাছাই করে একজনকে সাথে নিতেন।[বুখারী হা/২৫৯৩; মুসলিম হা/২৭৭০] ৪. স্ত্রীর বান্ধবীদের সাথে উত্তম আচরণ (المعاملة الحسنة مع صديقات الزوجات) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ স্ত্রীগণের বান্ধবী ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদ্ব্যবহার করতেন ও তাদের নিকট উপঢৌকনাদি প্রেরণ করতেন।[বুখারী হা/৩৮১৮; মুসলিম হা/২৪৩৫] ৫. স্ত্রীদের কক্ষ পৃথককরণ (فصل غرفات الزوجات) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ স্ত্রীগণের প্রত্যেকের কক্ষ পৃথক ছিল। যেগুলিকে আল্লাহ পাক ‘হুজুরাত’ (কক্ষ সমূহ) ‘বুয়ূত’ (ঘর সমূহ) ইত্যাদি নামে অভিহিত করেছেন (হুজুরাত ৪৯/৪; আহযাব ৩৩/৩৩)। ৬. অল্পে তুষ্ট থাকার নীতি অবলম্বন (اةخاذ مبدأ القناعة) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ স্ত্রীগণের অধিকাংশ বড় বড় ঘরের মেয়ে হলেও রাসূল (সাঃ)-এর শিক্ষাগুণে তাঁরা সবাই হয়ে উঠেছিলেন অল্পে তুষ্ট ও সহজ-সরল জীবন যাপনে অভ্যস্ত। ৭. দানশীলতায় অভ্যস্তকরণ (التعويد على السخاء) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ অন্যের স্বার্থকে নিজের স্বার্থের উপরে স্থান দেওয়ার অনন্য গুণে গুণান্বিতা ছিলেন এই সকল মহিয়সী নারীগণ। সম্পদ পায়ে লুটালেও তাঁরা সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করতেন না। দানশীলতায় তারা ছিলেন উদারহস্ত। উম্মুল মুমিনীন হযরত যয়নব বিনতে খুযায়মা (রাঃ) তো ‘উম্মুল মাসাকীন’ (মিসকীনদের মা) হিসাবে অভিহিত ছিলেন (মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১৫৩৫৭)। খায়বর বিজয়ের পর বিপুল গণীমত হস্তগত হয়। তখন রাসূল (সাঃ)-এর প্রাপ্য অংশ হতে প্রত্যেক স্ত্রীর জন্য বছরে ৮০ অসাক্ব খেজুর এবং ২০ অসাক্ব যব বরাদ্দ করা হয়।[2] সেই সাথে একটি করে দুগ্ধবতী উষ্ট্রী প্রদান করা হয়। কিন্তু দেখা গেল যে, পবিত্রা স্ত্রীগণ যতটুকু না হলে নয়, ততটুকু রেখে বাকী সব দান করে দিয়েছেন।[রহমাতুল্লিল ‘আলামীন ২/১৪২]

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...