কয়েক দিনের মধ্যেই নবীপত্নী হযরত সওদা বিনতে যাম‘আহ এবং নবীকন্যা উম্মে কুলছূম ও ফাতেমা এবং উসামা বিন যায়েদ ও তার মা রাসূল (সাঃ)-এর মুক্তদাসী উম্মে আয়মন মদীনায় পৌঁছে যান। এদের সকলকে আব্দুল্লাহ বিন আবুবকর তার পারিবারিক কাফেলার সাথে নিয়ে এসেছিলেন। যাদের মধ্যে হযরত আয়েশাও ছিলেন। কেবল নবীকন্যা যয়নব তার স্বামী আবুল ‘আছের সঙ্গে রয়ে গেলেন। যিনি বদর যুদ্ধের পরে আসেন (ইবনু হিশাম ১/৪৯৮)। নবীগৃহ নির্মাণ (بناء البيت صـ) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━ এই সময় মসজিদের পাশে মাটি ও পাথর দিয়ে রাসূল (সাঃ) ও তাঁর স্ত্রীদের জন্য নয়টি গৃহ নির্মাণ করা হয়। প্রত্যেকটি ছিল খেজুর পাতার ছাউনী। বাড়ীগুলির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আবু আইয়ূবের বাড়ী ছেড়ে সপরিবারে এখানে চলে আসেন। তিনি সেখানে সাত মাস ছিলেন’ (সীরাহ সহীহাহ ১/২২০)। উল্লেখ্য যে, তাঁদের মৃত্যুর পর উক্ত গৃহসমূহ ভেঙ্গে মসজিদের মধ্যে শামিল করে নেওয়া হয়। খলীফা আব্দুল মালেক ইবনে মারওয়ানের সময় (৬৫-৮৬ হিঃ/৬৮৫-৭০৫ খৃঃ) যখন উক্ত মর্মে নির্দেশনামা এসে পৌঁছে, তখন মদীনাবাসীগণ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। যেমন তারা কেঁদেছিল রাসূল (সাঃ)-এর মৃত্যুর দিন (ইবনু হিশাম ১/৪৯৮ টীকা-২)। মদীনার আবহাওয়া (جوّ المدينة) : ━━━━━━━━━━━━━━━━━━ মদীনায় নতুন আবহাওয়ায় এসে মুহাজিরগণের অনেকে অসুখে পড়েন। আবুবকর (রাঃ) কঠিন জ্বরে কাতর হয়ে কবিতা পাঠ করেন, كُلُّ امْرِئٍ مُصَبَّحٌ فِى أَهْلِهِ + وَالْمَوْتُ أَدْنَى مِنْ شِرَاكِ نَعْلِهِ ‘প্রত্যেক মানুষকে তার পরিবারে ‘সুপ্রভাত’ বলে সম্ভাষণ জানানো হয়। অথচ মৃত্যু সর্বদা জুতার ফিতার চাইতে নিকটবর্তী’। বেলালও অনুরূপ বিলাপ করে কবিতা পাঠ করেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) এসব কথা রাসূল (সাঃ)-এর কাছে তুলে ধরেন। তখন তিনি আল্লাহর নিকটে দো‘আ করেন, اللَّهُمَّ حَبِّبْ إِلَيْنَا الْمَدِينَةَ كَحُبِّنَا مَكَّةَ أَوْ أَشَدَّ، اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِى صَاعِنَا، وَفِى مُدِّنَا، وَصَحِّحْهَا لَنَا وَانْقُلْ حُمَّاهَا إِلَى الْجُحْفَةِ- ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাদের নিকটে মদীনাকে প্রিয় করে দাও, যেমন মক্কা আমাদের প্রিয় ছিল; বরং তার চাইতে বেশী। এখানকার খাদ্য-শস্যে বরকত দাও এবং মদীনাকে স্বাস্থ্যকর করে দাও এবং এর জ্বরসমূহকে (দূরে) জোহফায় সরিয়ে দাও’।(বুখারী হা/১৮৮৯, ৫৬৭৭) ফলে আল্লাহর ইচ্ছায় মদীনার অবস্থার পরিবর্তন ঘটে এবং সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরী হয়।