in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
নাজাশীর দরবারে কুরায়েশ প্রতিনিধি দল সম্পর্কে কিছু লিখ?

1 Answer

0 votes
by
হাবশায় গিয়ে যাতে মুসলমানগণ শান্তিতে থাকতে না পারে, সেজন্য কুরায়েশ নেতারা তাদেরকে ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করল। এ উদ্দেশ্য সফল করার জন্য তারা কুশাগ্রবুদ্ধি কুটনীতিবিদ আমর ইবনুল ‘আছ এবং আব্দুল্লাহ ইবনু আবী রাবী‘আহকে দায়িত্ব দিল। এ দু’জন পরে মুসলমান হন। ১ম জন ৭ম হিজরীর প্রথম দিকে এবং ২য় জন ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের পর। আব্দুল্লাহ ছিলেন আবু জাহলের বৈপিত্রেয় সহোদর ভাই। নাম ছিল বুহায়রা (بُحَيرى)। ইসলাম গ্রহণের পর আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তার নাম রাখেন ‘আব্দুল্লাহ’ (ইবনু হিশাম ১/৩৩৩, টীকা-১)। তারা মহামূল্য উপঢৌকনাদি নিয়ে হাবশা যাত্রা করেন এবং সেখানে গিয়ে প্রথমে খ্রিষ্টানদের নেতৃস্থানীয় ধর্মনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাদের ক্ষুরধার যুক্তি এবং মূল্যবান উপঢৌকনাদিতে ভুলে দরবারের পাদ্রী নেতারা একমত হয়ে যান। পরের দিন আমর ইবনুল ‘আছ উপঢৌকনাদি নিয়ে বাদশাহ নাজাশীর দরবারে উপস্থিত হলেন। অতঃপর তারা বললেন, হে বাদশাহ! আপনার দেশে আমাদের কিছু অজ্ঞ-মূর্খ ছেলে-ছোকরা পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। যারা তাদের কওমের দ্বীন পরিত্যাগ করেছে এবং তারা আপনাদের ধর্মেও প্রবেশ করেনি। তারা এমন এক নতুন দ্বীন নিয়ে এসেছে, যা আমরা কখনো শুনিনি বা আপনিও জানেন না। আমাদের কওমের নেতৃবৃন্দ আমাদেরকে আপনার নিকটে পাঠিয়েছেন, যাতে আপনি তাদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে ফেরৎ পাঠান’। তাদের কথা শেষ হলে উপস্থিত পাদ্রীনেতাগণ কুরায়েশ দূতদ্বয়ের সমর্থনে মুহাজিরগণকে তাদের হাতে সোপর্দ করার জন্য বাদশাহকে অনুরোধ করেন। তখন বাদশাহ রাগতঃ স্বরে বলেন, আল্লাহর কসম! এটা কখনোই হতে পারে না। তারা আমার দেশে এসেছে এবং অন্যদের চাইতে আমাকে পসন্দ করেছে। অতএব তাদের বক্তব্য না শুনে কোনরূপ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। ফলে তাঁর নির্দেশক্রমে জা‘ফর বিন আবু তালিবের নেতৃত্বে মুসলিম প্রতিনিধি দল বাদশাহ্র দরবারে উপস্থিত হয়ে তাঁকে সালাম দিলেন। কিন্তু সিজদা করলেন না। বাদশাহ তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা প্রথানুযায়ী আমাকে সিজদা করলে না কেন? যেমন ইতিপূর্বে তোমাদের কওমের প্রতিনিধিদ্বয় এসে করেছে? বাদশাহ আরও বললেন, বাপ-দাদার ধর্ম ত্যাগ করে এমনকি আমাদের ধর্ম গ্রহণ না করে নতুন যে ধর্মে তোমরা দীক্ষা নিয়েছ, সেটা কী, আমাকে শোনাও!’ জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব বললেন, হে বাদশাহ! আমাদের ধর্মের নাম ‘ইসলাম’। আমরা স্রেফ আল্লাহর ইবাদত করি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না। বাদশাহ বললেন, কে তোমাদের এসব কথা শিখিয়েছেন? জা‘ফর বললেন, আমাদের মধ্যেরই একজন ব্যক্তি। ইতিপূর্বে আমরা মূর্তিপূজা ও অশ্লীলতা এবং অন্যায় ও অত্যাচারে আকণ্ঠ নিমজ্জিত ছিলাম। আমরা শক্তিশালীরা দুর্বলদের শোষণ করতাম। এমতাবস্থায় আল্লাহ মেহেরবানী করে আমাদের মধ্যে তাঁর শেষনবীকে প্রেরণ করেছেন। তাঁর নাম ‘মুহাম্মাদ’। তিনি আমাদের চোখের সামনে বড় হয়েছেন। তাঁর বংশ মর্যাদা, সততা, ন্যায়পরায়ণতা, আমানতদারী, সংযমশীলতা, পরোপকারিতা প্রভৃতি গুণাবলী আমরা জানি। নবুঅত লাভের পর তিনি আমাদেরকে তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছেন এবং মূর্তিপূজা পরিত্যাগ করে সর্বাবস্থায় এক আল্লাহর ইবাদত করার আহবান জানিয়েছেন। সাথে সাথে যাবতীয় অন্যায়-অপকর্ম হতে তওবা করে সৎকর্মশীল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি এবং এক আল্লাহর ইবাদত করছি ও হালাল-হারাম মেনে চলছি। এতে আমাদের কওমের নেতারা আমাদের উপর ক্রুদ্ধ হয়েছেন এবং আমাদের উপর প্রচন্ড নির্যাতন চালিয়েছেন। সেকারণ বাধ্য হয়ে আমরা সবকিছু ফেলে আপনার রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছি আপনার সুশাসনের খবর শুনে। আমরা অন্যস্থান বাদ দিয়ে আপনাকে পসন্দ করেছি এবং আপনার এখানেই আমরা থাকতে চাই। আশা করি আমরা আপনার নিকটে অত্যাচারিত হব না’। অতঃপর জাফর বললেন, হে বাদশাহ! অভিবাদন সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আমাদের জানিয়েছেন যে, জান্নাতবাসীদের পরস্পরে অভিবাদন হল ‘সালাম’ এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদেরকে পরস্পরে ‘সালাম’ করার নির্দেশ দিয়েছেন’। বাদশাহ বললেন, ঈসা ও তাঁর দ্বীন সম্পর্কে তোমরা কি বলতে চাও? উত্তরে জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব সূরা মারিয়ামের শুরু থেকে ৩৬ পর্যন্ত আয়াতগুলি পাঠ করে শুনান। যেখানে হযরত যাকারিয়া ও ইয়াহইয়া (আঃ)-এর বিবরণ, মারিয়ামের প্রতিপালন, ঈসার জন্মগ্রহণ ও লালন-পালন, মাতৃক্রোড়ে কথোপকথন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা রয়েছে। বাদশাহ ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক এবং তাওরাত-ইনজীলে পন্ডিত ব্যক্তি। কুরআনের অপূর্ব বাকভঙ্গি, শব্দশৈলী ও ভাষালংকার এবং ঘটনার সারবত্তা উপলব্ধি করে বাদশাহ অঝোর নয়নে কাঁদতে থাকলেন। সাথে

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...