in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
কুরায়েশ বাণিজ্য কাফেলার অবস্থা সম্পর্কে কিছু তথ? দাও?

2 Answers

0 votes
by
কুরায়েশ বাণিজ্য কাফেলার নেতা আবু সুফিয়ান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পথ চলছিলেন। যাকেই পেতেন, তাকেই মদীনা বাহিনী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন। তিনি একটি সূত্রে জানতে পারলেন যে, কাফেলার উপরে হামলা করার জন্য মুহাম্মাদ নির্দেশ দিয়েছেন। এ সংবাদে ভীত হয়ে তিনি যামযাম বিন আমর আল-গিফারী(ضَمْضم بن عمرو) কে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মক্কায় পাঠিয়ে দিলেন, যাতে দ্রুত সাহায্যকারী বাহিনী পৌঁছে যায়। এরপর বদর প্রান্তর অতিক্রম করার আগেই তিনি কাফেলা থামিয়ে দিয়ে নিজে অগ্রসর হন এবং মাজদী বিন আমর(مَجْدِى بن عمرو) এর কাছে মদীনা বাহিনীর খবর নেন। তার কাছে জানতে পারেন যে, দুজন উষ্ট্রারোহীকে তারা দেখেছিল, যারা টিলার পাশে তাদের উট বসিয়ে মশকে পানি ভরে নিয়ে চলে গেছে। সুচতুর আবু সুফিয়ান সঙ্গে সঙ্গে টিলার পাশে গিয়ে উটের গোবর থেকে খেজুরের অাঁটি খুঁজে বের করে বুঝে নেন যে, এটি মদীনার উটের গোবর। ব্যস! তখনই ফিরে এসে কাফেলাকে নিয়ে বদরকে বামে রেখে মূল রাস্তা ছেড়ে ডাইনে পশ্চিম দিকে উপকূলের পথ ধরে দ্রুত চলে গেলেন। এভাবে তিনি স্বীয় কাফেলাকে মদীনা বাহিনীর কবল থেকে বাঁচিয়ে নিতে সক্ষম হলেন। অতঃপর তিনি নিরাপদে পার হয়ে আসার খবর মক্কায় পাঠিয়ে দিলেন। যাতে ইতিপূর্বে পাঠানো খবরের কারণে তারা অহেতুক যুদ্ধে বের না হয়।[1]


মাক্কী বাহিনীর অগ্রযাত্রা :
━━━━━━━━━━━━━━━
আবু সুফিয়ানের প্রথম পত্র পেয়ে বাণিজ্য কাফেলা উদ্ধারের জন্য ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আবু জাহলের নেতৃত্বে ১৩০০ মাক্কী ফৌজ রওয়ানা হয়ে যায়। অতঃপর রাবেগ-এর পূর্ব দিকে জুহফা নামক স্থানে পৌঁছলে পত্রবাহকের মাধ্যমে আবু সুফিয়ানের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের খবর পেয়ে বাহিনীর সবাই মক্কায় ফিরে যেতে চাইল। কিন্তু আবু জাহলের দম্ভের সামনে কারু মতামত গ্রাহ্য হল না। তবু তার আদেশ অমান্য করে আখনাস বিন শারীক্ব আছ-ছাক্বাফী(الْأَخْنَسُ بْنُ شَرِيق الثَّقَفِيُّ)-এর নেতৃত্বে বনু যোহরা(بَنُو زُهْرَة) গোত্রের ৩০০ লোক মক্কায় ফিরে গেল। আখনাস ছিলেন ত্বায়েফের ছাক্বীফ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তিনি ছিলেন বনু যোহরা গোত্রের মিত্র ও নেতা। তাঁর এই দূরদর্শিতার কারণে তিনি উক্ত গোত্রে আজীবন সম্মানিত নেতা হিসাবে বরিত ছিলেন। বনু হাশেমও ফিরে যেতে চাইল। কিন্তু মুহাম্মাদ-এর স্বগোত্র হওয়ায় তাদের উপরে আবু জাহলের কঠোরতা ছিল অন্যদের চেয়ে বেশী। ফলে তারা ক্ষান্ত হন।
উল্লেখ্য যে, আলী (রাঃ)-এর বড় ভাই ত্বালিব বিন আবু ত্বালিব বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও জনৈক কুরায়েশ নেতার সাথে বাদানুবাদের প্রেক্ষিতে প্রত্যাবর্তনকারীদের সাথে মক্কায় ফিরে যান (ইবনু হিশাম ১/৬১৯)।
অতঃপর আবু জাহল বদর অভিমুখে রওয়ানা হন এবং দর্পভরে বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা বদরে যাব ও সেখানে তিনদিন থাকব ও আমোদ-ফূর্তি করে পান ভোজন করব। এর ফলে সমগ্র আরব জাতির উপরে আমাদের শক্তি প্রকাশিত হবে ও সকলে ভীত হবে। এই সময় সব মিলিয়ে মাক্কী বাহিনীতে এক হাযার ফৌজ ছিল। তন্মধ্যে দু’শো অশ্বারোহী, ছয়শো লৌহবর্ম ধারী এবং গায়িকা বাঁদী দল তাদের বাদ্যযন্ত্রাদি সহ ছিল। প্রতি মনযিলে খাদ্যের জন্য তারা ৯টি বা ১০টি করে উট যবেহ করত।
উল্লেখ্য যে, আবু সুফিয়ানের বাণিজ্য কাফেলায় সকল গোত্রের লোকদের মালামাল ছিল। তাছাড়া মাক্কী বাহিনীতে বনু ‘আদী ব্যতীত কুরায়েশদের সকল গোত্রের লোক বা তাদের প্রতিনিধি যোগদান করেছিল। অথবা যোগদানে বাধ্য করা হয়েছিল। যেমন রাসূল (সাঃ)-এর চাচা আববাস, হযরত আলীর দু’ভাই ত্বালেব ও ‘আক্বীল। রাসূল (সাঃ)-এর জামাতা আবুল ‘আছ সহ বনু হাশেমের লোকেরা। তারা আসতে অনিচ্ছুক ছিলেন। নেতাদের মধ্যে কেবল আবু লাহাব যাননি। তিনি তার বদলে তার কাছে ঋণগ্রস্ত একজন ব্যক্তিকে পাঠিয়েছিলেন।[ইবনু হিশাম ১/৬১৮-১৯; আল-বিদায়াহ ৩/২৬০]


রওয়ানাকালে আবু জাহল :
━━━━━━━━━━━━━━━━
আবু জাহল মক্কা থেকে রওয়ানার সময় দলবল নিয়ে কা‘বাগৃহের গেলাফ ধরে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করেছিল, اللَّهُمَّ انْصُرْ أَقْرَانَا لِلضَّيْفِ وَأَوْصَلَنَا لِلرَّحِمِ وَأَفَكَّنَا لِلْعَانِيْ، إِنْ كَانَ مُحَمَّدٌ عَلَى حَقٍّ فَانْصُرْهُ وَاِنْ كُنَّا عَلَى حَقٍّ فَانْصُرْنَا، وَرُوِي
0 votes
by
কুরায়েশ বাণিজ্য কাফেলার নেতা আবু সুফিয়ান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পথ চলছিলেন। যাকেই পেতেন, তাকেই মদীনা বাহিনী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন। তিনি একটি সূত্রে জানতে পারলেন যে, কাফেলার উপরে হামলা করার জন্য মুহাম্মাদ নির্দেশ দিয়েছেন। এ সংবাদে ভীত হয়ে তিনি যামযাম বিন আমর আল-গিফারী(ضَمْضم بن عمرو) কে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মক্কায় পাঠিয়ে দিলেন, যাতে দ্রুত সাহায্যকারী বাহিনী পৌঁছে যায়। এরপর বদর প্রান্তর অতিক্রম করার আগেই তিনি কাফেলা থামিয়ে দিয়ে নিজে অগ্রসর হন এবং মাজদী বিন আমর(مَجْدِى بن عمرو) এর কাছে মদীনা বাহিনীর খবর নেন। তার কাছে জানতে পারেন যে, দুজন উষ্ট্রারোহীকে তারা দেখেছিল, যারা টিলার পাশে তাদের উট বসিয়ে মশকে পানি ভরে নিয়ে চলে গেছে। সুচতুর আবু সুফিয়ান সঙ্গে সঙ্গে টিলার পাশে গিয়ে উটের গোবর থেকে খেজুরের অাঁটি খুঁজে বের করে বুঝে নেন যে, এটি মদীনার উটের গোবর। ব্যস! তখনই ফিরে এসে কাফেলাকে নিয়ে বদরকে বামে রেখে মূল রাস্তা ছেড়ে ডাইনে পশ্চিম দিকে উপকূলের পথ ধরে দ্রুত চলে গেলেন। এভাবে তিনি স্বীয় কাফেলাকে মদীনা বাহিনীর কবল থেকে বাঁচিয়ে নিতে সক্ষম হলেন। অতঃপর তিনি নিরাপদে পার হয়ে আসার খবর মক্কায় পাঠিয়ে দিলেন। যাতে ইতিপূর্বে পাঠানো খবরের কারণে তারা অহেতুক যুদ্ধে বের না হয়।[1] মাক্কী বাহিনীর অগ্রযাত্রা : ━━━━━━━━━━━━━━━ আবু সুফিয়ানের প্রথম পত্র পেয়ে বাণিজ্য কাফেলা উদ্ধারের জন্য ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আবু জাহলের নেতৃত্বে ১৩০০ মাক্কী ফৌজ রওয়ানা হয়ে যায়। অতঃপর রাবেগ-এর পূর্ব দিকে জুহফা নামক স্থানে পৌঁছলে পত্রবাহকের মাধ্যমে আবু সুফিয়ানের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের খবর পেয়ে বাহিনীর সবাই মক্কায় ফিরে যেতে চাইল। কিন্তু আবু জাহলের দম্ভের সামনে কারু মতামত গ্রাহ্য হল না। তবু তার আদেশ অমান্য করে আখনাস বিন শারীক্ব আছ-ছাক্বাফী(الْأَخْنَسُ بْنُ شَرِيق الثَّقَفِيُّ)-এর নেতৃত্বে বনু যোহরা(بَنُو زُهْرَة) গোত্রের ৩০০ লোক মক্কায় ফিরে গেল। আখনাস ছিলেন ত্বায়েফের ছাক্বীফ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তিনি ছিলেন বনু যোহরা গোত্রের মিত্র ও নেতা। তাঁর এই দূরদর্শিতার কারণে তিনি উক্ত গোত্রে আজীবন সম্মানিত নেতা হিসাবে বরিত ছিলেন। বনু হাশেমও ফিরে যেতে চাইল। কিন্তু মুহাম্মাদ-এর স্বগোত্র হওয়ায় তাদের উপরে আবু জাহলের কঠোরতা ছিল অন্যদের চেয়ে বেশী। ফলে তারা ক্ষান্ত হন। উল্লেখ্য যে, আলী (রাঃ)-এর বড় ভাই ত্বালিব বিন আবু ত্বালিব বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও জনৈক কুরায়েশ নেতার সাথে বাদানুবাদের প্রেক্ষিতে প্রত্যাবর্তনকারীদের সাথে মক্কায় ফিরে যান (ইবনু হিশাম ১/৬১৯)।

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...