উহুদ যুদ্ধে অংশগ্রহণের পেছনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল, যেগুলো বদর যুদ্ধের পর মক্কার কুরাইশদের প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষার সাথে জড়িত। মূল কারণগুলো হলো:
1. বদর যুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া: ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত বদর যুদ্ধে মক্কার কুরাইশরা মুসলমানদের কাছে মারাত্মকভাবে পরাজিত হয়েছিল। কুরাইশদের অনেক নেতা এবং যোদ্ধা নিহত হয়েছিল, যা তাদের মর্যাদা ও গৌরবে আঘাত করেছিল। সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা উহুদ যুদ্ধে প্রস্তুতি নেয়।
2. মুসলিমদের ক্ষমতা বৃদ্ধি ঠেকানো: বদর যুদ্ধে বিজয়ের ফলে মুসলিমদের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি পায়। মক্কার কুরাইশরা মনে করেছিল যে যদি তারা মুসলিমদের শক্তি বৃদ্ধি আটকাতে না পারে, তাহলে মুসলিমরা তাদের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠবে।
3. মদিনার বাণিজ্যিক ও কৌশলগত গুরুত্ব: মদিনা ছিল কুরাইশদের বাণিজ্য রুটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। মুসলমানরা মদিনায় শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করলে কুরাইশদের বাণিজ্য ও আর্থিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতো। তাই তারা চেয়েছিল মদিনায় মুসলমানদের দুর্বল করতে।
4. অন্তর্দ্বন্দ্বের সুযোগ: মক্কার কুরাইশরা জানত যে মদিনার অভ্যন্তরেও কিছু মানুষ, বিশেষত ইহুদি গোত্র ও মুনাফিকরা, মুসলমানদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল না। কুরাইশরা এই অভ্যন্তরীণ বিভাজন ও অন্তর্দ্বন্দ্বের সুযোগ নিতে চেয়েছিল।
5. ইসলামের বিস্তার রোধ করা: কুরাইশরা ইসলামকে তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক ব্যবস্থার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখত। ইসলামের দ্রুত বিস্তার এবং নবী মুহাম্মদ (সা.) এর নেতৃত্ব তাদের ক্ষমতা ও প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করেছিল, তাই তারা মুসলমানদের পরাজিত করতে চেয়েছিল।
এই কারণগুলো একত্রিত হয়ে উহুদ যুদ্ধের কারণ হিসেবে কাজ করে, যেখানে কুরাইশরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি বড় আকারের আক্রমণ চালায়।