in বাংলা by
ভ্রমণ মানুষকে কুপমন্ডুকতার ছত্রছায়া থেকে মুক্ত করে বিশাল পৃথিবীর অপার সৌন্দর্যের মধ্যে ঠাঁই দেয়। মানুষের মনকে করে তোলে উদার। ক্ষুদ্র এ মানব জীবনকে দান করে গতিশীলতা। আর সেই ভ্রমণ যদি হয় শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে তাহলে তো কথাই নেই। শিক্ষা সফরের মাধ্যমে মানুষের অসম্পূর্ণ ও আবদ্ধ জ্ঞান বিকাশ লাভের সুযোগ পায়। শিক্ষা সফর একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনকে করে আনন্দময় ও পরিপূর্ণ। শিক্ষা সফরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সুযোগ পায় নিজের দেশ ও জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তথা নিজের শেকড় সম্পর্কে জানতে। এছাড়া দেশের বাইরে সফরের মাধ্যমে তারা নানা দেশ ও জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জীবনযাত্রার সাথে পরিচিত হতে পারে যা তাদের জ্ঞানের সীমাকে প্রসারিত করে। শিক্ষার পূর্ণতা লাভে সফর: বই পড়ে যে শিক্ষা অর্জন করা হয় তা পরিপূর্ণ শিক্ষা নয়। শিক্ষার সাথে বাস্তব জ্ঞানের সংমিশ্রণ ঘটাতে পারলেই তা হয়ে উঠে পরিপূর্ণ শিক্ষা। নানা রকম ব্যবহারিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে এ পূর্ণতা অর্জন করা যায়। এসব কর্মকান্ডের মধ্যে শিক্ষা সফর অন্যতম। শিক্ষা সফরে গিয়ে শিক্ষার্থীরা শুধু আনন্দ লাভই করে না, বরং ঐতিহাসিক বিভিন্ন বিষয় প্রত্যক্ষ করে এবং সে বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করে। তাই প্রকৃত ও পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা অর্জনের জন্য শিক্ষা সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা সফরের প্রয়োজনীয়তা: বিজ্ঞানের এ যুগে চার দেয়ালের মাঝে বসেই শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর নানা প্রান্তের নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারে। কিন্তু সেই অর্জিত জ্ঞান কতটা ফলপ্রসূ সেটাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কোনো কিছু চোখে দেখে শেখা আর সে বিষয় মুখস্ত করে শেখার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। মুখস্ত বিদ্যার চেয়ে হাতে কলমে ব্যবহারিক শিক্ষা অধিক শ্রেয়। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন সেন্ট মার্টিন, দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ সিলেট, প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ পাহাড়পুর প্রভৃতি সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীরা বইয়ে পড়ে এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে শুনে। কিন্তু তারা যদি এসব স্থান নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করে তাহলে সে ছবি সারাজীবনের জন্য তাদের হৃদয় মন্দিরে জাগ্রত হয়ে থাকবে। শিক্ষা সফরের বিষয়গুলো সহজে আত্মস্থ হয়ে যায় এবং তা কখনোই স্মৃতি থেকে মুছে যায় না। সৃজনশীলতা ও মেধার বিকাশে শিক্ষা সফর: শিক্ষা সফরে গিয়ে ছেলেমেয়েরা অবাধ স্বাধীনতা পায়। এ সময়টুকু তারা নিজেদের ইচ্ছা মতো ব্যয় করতে পারে। নিত্য দিনের পড়াশুনার চাপ ভুলে মেতে উঠে আনন্দে। শিক্ষা সফরের অন্যতম আকর্ষণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, অভিনয়, আবৃত্তি, কৌতুক ইত্যাদি নানা রকমের বিষয় থাকে। ফলে একদিকে যেমন তাদের বিনোদন হয় অন্যদিকে তেমনি শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা ও সৃজনশীলতারও বিকাশ ঘটে। সাহায্য সহযোগিতা ও সম্প্রীতির মনোভাব গড়তে শিক্ষা সফর: একটি শিক্ষা সফর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আনুষঙ্গিক অনেক কাজ করতে হয়। যেমন, স্থান নির্বাচন করা, যাতায়াতের ব্যবস্থা করা, খাবার সরবরাহ করা ইত্যাদি। এসব কাজ শিক্ষকদের নির্দেশনা অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে করে থাকে। ছাত্রছাত্রীরা মিলেমিশে তাদের শিক্ষা সফরের প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাপনা করে থাকে। ফলে তাদের মধ্যে এক ধরণের সাহায্য-সহযোগিতা ও সম্প্রীতির মনোভাব গড়ে ওঠে। তাছাড়া এসব কাজ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্ব সচেতনতা বোধ জন্মে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনেও বড় রকমের দায়িত্ব গ্রহণে সাহায্য করে। দেশপ্রেমের উন্মেষে শিক্ষা সফর: শিক্ষা সফরে দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা নিজ দেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের জীবন-যাত্রার অবস্থা শিক্ষার্থীদের ভাবিয়ে তোলে যা তাদের মনের মধ্যে দেশাত্মবোধের চেতনা জাগ্রত করে। এটি তাদের প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসাবে গড়ে উঠতে সহায়তা করে। শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি লাভে শিক্ষা সফর: ছাত্র জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য পড়াশুনা করা। কিন্তু সারাক্ষণ ক্লাস, পড়া, পরীক্ষা এসবের মাঝে থাকতে থাকতে এক সময় পড়াশুনার প্রতি একঘেয়েমী চলে আসে। সামান্য একটু অবসরের জন্য মন আকুল হয়ে উঠে। লেখাপড়ার বেশি চাপে অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। শারীরিক অসুস্থতা মনকেও প্রভাবিত করে। তাই পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের চিত্তবিনোদনের প্রয়োজন আছে। এই বিনোদনের সর্বোৎকৃষ্ট উপায় শিক্ষা সফর। শিক্ষা সফরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন জ্ঞান অর্জন করতে পারে তেমনি শারীরিক ও মানসিকভাবেও প্রশান্তি লাভ করতে পারে। শিক্ষা সফরের উপযোগী স্থান: শিক্ষা সফরের জন্য এমন স্থান নির্বাচন করা উচিত যা হবে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনে সহায়ক। বাংলাদেশে এরূপ অনেক স্থান আছে যেগুলো শিক্ষা সফরের উপযোগী। এদেশে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার যা বিশেষ করে ভূগোল ও মৎস্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এ স্থান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এখানে তারা বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী, সামুদ্রিক পরিবেশ ও মৎস্য বিষয়ে প্রত্যক্ষভাবে জ্ঞান লাভ করতে পারে। সুন্দরবন উদ্ভিদ বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, সিলেট-এর মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ করার জন্য প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী

1 Answer

0 votes
by
শিক্ষা সফরের প্রয়োজনীয়তা হল ছাত্রদের বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রদান করা, যা পাঠ্যবইয়ের তত্ত্বকে জীবন্ত এবং প্রাসঙ্গিক করে তোলে। এটি শিক্ষার্থীদের নতুন স্থান, সংস্কৃতি, এবং পরিবেশ সম্পর্কে জানাতে সাহায্য করে, তাদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে বাড়ায়, এবং একাডেমিক ও সামাজিক দক্ষতার উন্নয়ন ঘটায়।

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...