পবিত্র কুরআন প্রথম যুগে বিভিন্ন উপায়ে সংরক্ষিত ছিল। এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর সঠিক সংরক্ষণ ও transmission নিশ্চিত করার জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সময় থেকেই কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রথম যুগে কুরআন সংরক্ষণের প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:
১. মৌখিক সংরক্ষণ
মৌখিক স্মরণ: কুরআন প্রথমে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মুখ থেকে শোনা হয়েছিল এবং তাঁর সাথীরা তা মনে রেখেছিল। অনেক সাহাবী (নবীর সঙ্গী) কুরআনকে মুখস্থ করে ফেলেছিল, যা "হাফিজ" হিসেবে পরিচিত।
২. লিখিত সংরক্ষণ
লেখার ব্যবস্থা: নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগে কুরআনের আয়াতগুলো লিখে রাখা হয়েছিল। যেসব সাহাবী লেখক ছিলেন, তারা বিভিন্ন উপাদানে (যেমন: চামড়া, পাথর, গাছের পাতা) কুরআন লিখে রাখতেন। বিশেষ করে আবু বাকর (রা.) এবং উসমান (রা.)-এর সময়ে লিখিত কুরআন সংকলনের কাজ শুরু হয়।
৩. কুরআনের সঠিকতা যাচাই
সংশোধন ও যাচাই: নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সময়ে যারা কুরআন মুখস্থ করেছিল তারা মাঝে মাঝে একে অপরের সঙ্গে মিলিয়ে যাচাই করত। নবী নিজেও কুরআনের আয়াতগুলো পর্যালোচনা করতেন, যাতে কোনো ভুল বা বিভ্রান্তি না হয়।
৪. উসমানী মসহাফ
একক সংস্করণ: উসমান (রা.)-এর শাসনামলে কুরআনকে একত্রিত করে একটি মসহাফ (লেখা) তৈরি করা হয়েছিল। উসমানী মসহাফ হলো কুরআনের একটি সাধারণ সংকলন, যা মুসলিম সমাজের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এটি মূল কুরআন হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং পরে এই সংস্করণকে ভিত্তি করে অন্যান্য সংস্করণ তৈরি করা হয়।
এইভাবে, প্রথম যুগে কুরআন মৌখিক ও লিখিত উভয়ভাবে সংরক্ষিত হয়েছিল, যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এর সঠিকতা ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করেছে।