ইরাক (Iraq) মধ্যপ্রাচ্যের একটি রাষ্ট্র, যা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটি পেছনের বহু হাজার বছরের ইতিহাসের জন্য পরিচিত, এবং প্রাচীন মেসোপটেমিয়া অঞ্চলের কেন্দ্রস্থল ছিল।
সাধারণ পরিচিতি:
1. ভূগোল:
ইরাকের অবস্থান: পশ্চিম এশিয়ায়, যেখানে উত্তরে তুরস্ক, দক্ষিণ-পশ্চিমে সিরিয়া, দক্ষিণ-পূর্বে ইরান এবং দক্ষিণে কুয়েত ও সৌদি আরব রয়েছে।
রাজধানী: বাগদাদ (Baghdad), যা দেশের বৃহত্তম শহর এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
2. জনসংখ্যা:
জনসংখ্যা: প্রায় ৪০ মিলিয়নের বেশি (২০২৩ সালের আনুমানিক)।
প্রধান জাতিগোষ্ঠী: আরব, কুর্দ, আসিরীয় এবং অন্যান্য।
3. ভাষা:
সরকারি ভাষা: আরবি এবং কুর্দিশ।
4. ধর্ম:
প্রধান ধর্ম: ইসলাম (সাধারণত শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়)।
ইতিহাস:
ইরাকের ইতিহাস প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, যা ইতিহাসের প্রাচীনতম সভ্যতা গুলির মধ্যে একটি। এখানে সুমেরীয়, আক্কাদীয়, বাবিলনীয় এবং অ্যাসিরীয় সভ্যতা গঠিত হয়েছিল।
আধুনিক যুগে, ইরাক ১৯২০ সালে ব্রিটিশ অধিকার থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৩২ সালে স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
অর্থনীতি:
ইরাকের অর্থনীতি মূলত তেল উৎপাদনের উপর ভিত্তি করে, যা দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি পণ্য।
কৃষি এবং খনিরও দেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সংস্কৃতি:
ইরাকের সংস্কৃতি প্রাচীন এবং সমৃদ্ধ, যেখানে কবিতা, সঙ্গীত, শিল্প ও স্থাপত্যের প্রভাব লক্ষণীয়।
এটি বিভিন্ন জাতিগত এবং সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর মিলনস্থল, যার ফলে এর সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময় এবং সমৃদ্ধ।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি:
ইরাকের রাজনীতি ইতিহাসের একটি জটিল অধ্যায়, যেখানে সামরিক অভ্যুত্থান, গৃহযুদ্ধ এবং বিদেশী হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
২০০৩ সালে মার্কিন সামরিক আগ্রাসনের পর দেশটি ব্যাপক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি:
ইরাক বর্তমানে একটি গণতান্ত্রিক সরকার পরিচালিত হলেও দেশটির নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এখনও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।
দেশের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এবং ধর্মীয় সহিংসতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
সারসংক্ষেপ:
ইরাক একটি ইতিহাস ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধ দেশ, যা মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক অবস্থানে অবস্থিত। দেশের অর্থনীতি তেল কেন্দ্রিক হলেও এটি বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দ্বারা সমৃদ্ধ।