মুসলিম সৈন্যদের অবস্থান বিভিন্ন যুদ্ধে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এবং তাদের নেতৃত্ব ও স্থাপনাগুলো যুদ্ধে জয়লাভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো:
1. বদরের যুদ্ধ (৬২৪ খ্রিস্টাব্দ):
বদরের যুদ্ধে মুসলিমরা একটি উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছিল, যেখানে তাদের পিছনে ছিল একটি পানি উৎস (কূপ)। তারা কৌশলগতভাবে কূপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কুরাইশ বাহিনীর পানির প্রয়োজনীয়তা ব্যাহত করেছিল। তাদের অবস্থান ছিল কুরাইশদের হামলার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক, কারণ মুসলিমরা একদিকে পাহাড় ও অন্যদিকে কূপের দ্বারা সুরক্ষিত ছিল।
2. উহুদের যুদ্ধ (৬২৫ খ্রিস্টাব্দ):
উহুদের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী উহুদ পাহাড়ের নিচে অবস্থান নিয়েছিল, যাতে তাদের পিছনে পাহাড় থাকে এবং সামনের দিক থেকে কুরাইশ বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করা যায়। তবে একটি ভুল কৌশলগত পদক্ষেপ—তীরন্দাজদের পাহাড়ের অবস্থান ছেড়ে যাওয়া—পরবর্তীতে মুসলিমদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
3. খন্দকের যুদ্ধ (৬২৭ খ্রিস্টাব্দ):
খন্দকের যুদ্ধে (অথবা ট্রেঞ্চের যুদ্ধ) মুসলিমরা মদিনার চারপাশে একটি খন্দক (পরিখা) খনন করে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এটি ছিল একটি কৌশলগত পরিকল্পনা, যা মূলত মদিনার পশ্চিমে পাহাড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকের সঙ্গে মিলিত হয়ে কুরাইশদের বড় আকারের বাহিনীর আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করেছিল।
4. তাবুকের যুদ্ধ (৬৩০ খ্রিস্টাব্দ):
তাবুক অভিযানে মুসলিমরা সিরিয়া সীমান্তের কাছে একটি কৌশলগত অবস্থানে গিয়ে তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছিল। যদিও এ যুদ্ধে কোনো প্রকৃত যুদ্ধ হয়নি, তাদের শক্তিশালী অবস্থান ও নেতৃত্বের কারণে শত্রুরা পিছু হটেছিল।
প্রতিটি যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী তাদের অবস্থান, পরিবেশ এবং কৌশলগত সুবিধা ব্যবহার করে শত্রুদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিল।