in বাংলা by
জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও তার প্রতিকার ব্যাখা কর?

2 Answers

0 votes
by
ভূমিকা: 'Optimum population is a boon, over population is a bane' -Aristotle জনসংখ্যা বলতে কোনো নির্দিষ্ট জাতি বা ভৌগোলিক এলাকার মোট লোকসংখ্যাকে বুঝায়। জনসংখ্যা ছাড়া কোনো সমাজ বা রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। কিন্তু অতিরিক্ত জনসংখ্যা সেই সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটি জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রধান সমস্যার কথা বলতে গেলে সবার আগে জনসংখ্যা সমস্যার কথা চলে আসে। তবে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও এর বাস্তবায়নের ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশ্ব জনসংখ্যা পরিস্থিতি: জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৭.১৬৫ বিলিয়ন বা সাতশ কোটিরও বেশি। বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ভয়াবহ হারে। বিশেষ করে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই হার সবচেয়ে বেশি। বিশ্বে প্রতিবছর ১.৮% হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৮০৪ সালে যেখানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১০০ কোটি সেখানে মাত্র ১০০ বছরের ব্যবধানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় সাত গুণ। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা রয়েছে চীনের। চীনে বাস করে প্রায় ১৩৬ কোটি জনগণ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে গোটা বিশ্বে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন সমস্যা। বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতি: পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম। বর্তমানে ১৬ কোটিরও বেশি লোকের বাস রয়েছে এই দেশে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত ভয়াবহ সমস্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বর্তমান হার ২.৪%। এ দেশের প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় বাস করে ১২৩৭ লোক, যেখানে এক দশক আগে ছিল ৮৩২ লোকের বসবাস। জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই চিত্র লক্ষ্য করলে বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যার ভয়াবহ রূপ খুব সহজেই অনুমান করা যায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রাকৃতিক কারণ: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। কিছু প্রাকৃতিক কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী। কারণসমূহ হচ্ছে- ভৌগোলিক অবস্থান, আহবাওয়া ও জলবায়ুর প্রভাব, মৃত্যুহার হ্রাস, গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব প্রভৃতি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির আর্থ-সামাজিক কারণ: প্রকৃতিগত কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এই সমস্যার জন্য প্রধানত দায়ী হচ্ছে দেশের জনগণ ও তার সমাজ ব্যবস্থা। সমাজের বিভিন্ন গতানুগতিক নিয়ম ও রীতিনীতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসব কারণে বাংলাদেশের সমাজ বর্তমানে জনসংখ্যা সমস্যায় জর্জরিত। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির আর্থ-সামাজিক কারণগুলো হলো- - যথাযথ শিক্ষার অভাব ও অজ্ঞতা। - বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ। - দারিদ্র্যের প্রভাব। - নিম্ন জীবনযাত্রার মান। - ধর্মীয় অন্ধ বিশ্বাস ও গোঁড়ামি। - সামাজিক কুসংস্কার। - জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। - নারীশিক্ষার অভাব। - সুস্থ বিনোদনের অভাব। - পুত্র সন্তান লাভের আশা। - সচেতনতার অভাব। - আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা। জনসংখ্যা বৃদ্ধির অসুবিধা: একটি দেশের উন্নয়ন সর্বদা তার জনগণের সংখ্যা ও বণ্টনের উপর নির্ভর করে। দেশের সম্পদের চেয়ে জনসংখ্যা অধিক হলে সেই দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জাতীয় জীবনে স্থবিরতা নেমে আসে। মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হয় গোটা রাষ্ট্রকে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যে সমস্যা ও অসুবিধাসমূহ পরিলক্ষিত হয়- - দারিদ্র্য ও খাদ্যে ঘাটতি। - বাসস্থানের সমস্যা। - ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি। - মাথাপিছু আয় হ্রাস। - বেকারত্বের হার বৃদ্ধি। - কৃষিজমির পরিমাণ হ্রাস। - শিল্পোন্নয়নে বাধার সৃষ্টি। - সমাজে অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি। - বৈদেশিক ঋণ বৃদ্ধি। - মূল্যবোধের অবনতি। - বৈদেশিক নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি। - চিকিৎসার অভাব। - চলাফেরায় অসুবিধা। - স্বাস্থ্যহীনতা, পুষ্টিহীনতা ও দুরারোগ্য ব্যাধির প্রসার। - দুর্ভিক্ষ ও মহামারী। - পরিবেশ দূষণ। জনসংখ্যা সমস্যার প্রতিকার: জনসংখ্যা একটা দেশের প্রধান সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও অধিক জনসংখ্যা সেই দেশের জন্য অভিশাপস্বরূপ। বাংলাদেশে যেহেতু জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটি জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে সেহেতু এই সমস্যা প্রতিকারে কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। সেগুলো হলো- - জনসংখ্যা নীতির পূর্ণ বাস্তবায়ন। - পরিবার পরিকল্পনা। - দেশব্যাপী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার। - নারী শিক্ষার প্রসার। - বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ রোধ। - অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
0 votes
by
জনসংখ্যা ছাড়া কোনো সমাজ বা রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। কিন্তু অতিরিক্ত জনসংখ্যা সেই সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটি জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রধান সমস্যার কথা বলতে গেলে সবার আগে জনসংখ্যা সমস্যার কথা চলে আসে। তবে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও এর বাস্তবায়নের ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশ্ব জনসংখ্যা পরিস্থিতি: জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৭.১৬৫ বিলিয়ন বা সাতশ কোটিরও বেশি। বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ভয়াবহ হারে। বিশেষ করে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই হার সবচেয়ে বেশি। বিশ্বে প্রতিবছর ১.৮% হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৮০৪ সালে যেখানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১০০ কোটি সেখানে মাত্র ১০০ বছরের ব্যবধানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় সাত গুণ। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা রয়েছে চীনের। চীনে বাস করে প্রায় ১৩৬ কোটি জনগণ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে গোটা বিশ্বে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন সমস্যা। বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতি: পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম। বর্তমানে ১৬ কোটিরও বেশি লোকের বাস রয়েছে এই দেশে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত ভয়াবহ সমস্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বর্তমান হার ২.৪%। এ দেশের প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় বাস করে ১২৩৭ লোক, যেখানে এক দশক আগে ছিল ৮৩২ লোকের বসবাস। জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই চিত্র লক্ষ্য করলে বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যার ভয়াবহ রূপ খুব সহজেই অনুমান করা যায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রাকৃতিক কারণ: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। কিছু প্রাকৃতিক কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী। কারণসমূহ হচ্ছে- ভৌগোলিক অবস্থান, আহবাওয়া ও জলবায়ুর প্রভাব, মৃত্যুহার হ্রাস, গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব প্রভৃতি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির আর্থ-সামাজিক কারণ: প্রকৃতিগত কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এই সমস্যার জন্য প্রধানত দায়ী হচ্ছে দেশের জনগণ ও তার সমাজ ব্যবস্থা। সমাজের বিভিন্ন গতানুগতিক নিয়ম ও রীতিনীতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসব কারণে বাংলাদেশের সমাজ বর্তমানে জনসংখ্যা সমস্যায় জর্জরিত। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির আর্থ-সামাজিক কারণগুলো হলো- - যথাযথ শিক্ষার অভাব ও অজ্ঞতা। - বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ। - দারিদ্র্যের প্রভাব। - নিম্ন জীবনযাত্রার মান। - ধর্মীয় অন্ধ বিশ্বাস ও গোঁড়ামি। - সামাজিক কুসংস্কার। - জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। - নারীশিক্ষার অভাব। - সুস্থ বিনোদনের অভাব। - পুত্র সন্তান লাভের আশা। - সচেতনতার অভাব। - আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা। জনসংখ্যা বৃদ্ধির অসুবিধা: একটি দেশের উন্নয়ন সর্বদা তার জনগণের সংখ্যা ও বণ্টনের উপর নির্ভর করে। দেশের সম্পদের চেয়ে জনসংখ্যা অধিক হলে সেই দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জাতীয় জীবনে স্থবিরতা নেমে আসে। মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হয় গোটা রাষ্ট্রকে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যে সমস্যা ও অসুবিধাসমূহ পরিলক্ষিত হয়- - দারিদ্র্য ও খাদ্যে ঘাটতি। - বাসস্থানের সমস্যা। - ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি। - মাথাপিছু আয় হ্রাস। - বেকারত্বের হার বৃদ্ধি। - কৃষিজমির পরিমাণ হ্রাস। - শিল্পোন্নয়নে বাধার সৃষ্টি। - সমাজে অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি। - বৈদেশিক ঋণ বৃদ্ধি। - মূল্যবোধের অবনতি। - বৈদেশিক নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি। - চিকিৎসার অভাব। - চলাফেরায় অসুবিধা। - স্বাস্থ্যহীনতা, পুষ্টিহীনতা ও দুরারোগ্য ব্যাধির প্রসার। - দুর্ভিক্ষ ও মহামারী। - পরিবেশ দূষণ। জনসংখ্যা সমস্যার প্রতিকার: জনসংখ্যা একটা দেশের প্রধান সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও অধিক জনসংখ্যা সেই দেশের জন্য অভিশাপস্বরূপ। বাংলাদেশে যেহেতু জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটি জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে সেহেতু এই সমস্যা প্রতিকারে কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। সেগুলো হলো- - জনসংখ্যা নীতির পূর্ণ বাস্তবায়ন। - পরিবার পরিকল্পনা। - দেশব্যাপী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার। -

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...