কোরআনে বংশগতি বা বংশপরম্পরার বিষয়ে সরাসরি অনেক আয়াত নেই, তবে কিছু আয়াতে আল্লাহ মানবজাতির সৃষ্টির প্রক্রিয়া এবং পারিবারিক সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হলো:
1. মানবজাতির সৃষ্টি: কোরআনে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন যে তিনি মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন এবং বিভিন্ন জাতি ও বংশে বিভক্ত করেছেন যাতে মানুষ পরস্পরের মধ্যে পরিচিত হতে পারে। সূরা আল-হুজরাত (৪৯:১৩) এ বলা হয়েছে:
"হে মানুষ, আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও বংশে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পার।"
এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে আল্লাহ মানবজাতিকে বিভিন্ন বংশ ও জাতিতে সৃষ্টি করেছেন, তবে মূল উদ্দেশ্য হলো পারস্পরিক পরিচয় ও সহযোগিতা, বংশগত শ্রেষ্ঠত্ব নয়।
2. বংশের ধারাবাহিকতা: কোরআনে হযরত নুহ (আঃ), ইব্রাহিম (আঃ) এবং অন্যান্য নবীদের বংশের ধারাবাহিকতার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আল্লাহ ইব্রাহিম (আঃ)-এর বংশে নবীদের প্রেরণ করেছেন, যা বংশগতি এবং প্রজন্মের মধ্যে আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের গুরুত্ব প্রকাশ করে।
3. সন্তান জন্মদান: কোরআনে বলা হয়েছে যে আল্লাহ সন্তান দান করেন এবং এটি আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা, তাকে সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা, তাকে বংশহীন রাখেন। সূরা আশ-শুরা (৪২:৪৯-৫০) তে বলা হয়েছে:
"আল্লাহ যার ইচ্ছা তাকে কন্যা সন্তান দান করেন এবং যার ইচ্ছা তাকে পুত্র সন্তান দান করেন অথবা উভয়ই দেন এবং যার ইচ্ছা তাকে বন্ধ্যা করে দেন।"
এছাড়াও, কোরআনে বংশগতির ব্যাপারে মানুষকে আল্লাহর ইচ্ছা এবং নির্দেশের প্রতি আস্থা রাখতে বলা হয়েছে, কারণ সন্তানের জন্ম বা বংশের ধারাবাহিকতা আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন।