পারমাণবিক ব্যাটারি বা নিউক্লিয়ার ব্যাটারি প্রকৃতপক্ষে একে এটোমিক ব্যাটারি বলে।
আমরা জানি কিছু কিছু পদার্থ তেজস্ক্রিয় রশ্মি যেমন আলফা, বিটা, গামা রশ্মি বিকিরণ করে। এমন পদার্থ হচ্ছে রেডিয়াম, থোরিয়াম, ইউরেনিয়াম ইত্যাদি।
এদের থেকে ক্ষরিত এই তেজষ্ক্রিয় আলফা বিটা রশ্মি কিছু পদার্থ বা গ্যাসের মধ্যদিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আয়নিত করতে পারে।
এই টেকনিকের উপর ভিক্তি করে বিজ্ঞানীরা এমন একটি ব্যাটারি বানিয়েছেন যাতে রাসায়নিক পদার্থের পরিবর্তে এই তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার হয়েছে এবং ধনাত্মক ঋনাত্মক আয়ন উৎপন্নের বদলে তেজস্ক্রিয় রশ্মি গ্যাসের আয়নিত করণ থেকে এনোড ও ক্যাথোডে ইলেকট্রন প্রবাহের সৃষ্টি করেছে। এই সিস্টেমকেই পারমাণবিক ব্যাটারি বলা হয়।
যেহেতু এখানে রাসায়নিক পদার্থের বদলে কঠিন তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার হয়েছে তাই এই ব্যাটারিতে কোন প্রকার চার্জ করা যায়না। এখানে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটেনা। যতদিন তেজস্ক্রিয় রশ্মি ক্ষরিত হতে থাকবে ততদিন ব্যাটারি বিদ্যুৎ দিতে পারবে। আমরা জানি তেজস্ক্রিয় পদার্থের অর্ধায়ু বেশ বেশি যেমন ৭০ বছর, ৫০০ বছর হতে পারে। তাই পারমানবিক ব্যাটারিতে চার্জ দেওয়া না গেলেও তা ৫০, ৭০, ১০০ বছর বিদ্যুৎ দিতে পারবে।
এখানে আয়ু কমিয়ে বলার কারণ হল ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পদার্থ ১০০ বছরের বেশি তেজস্ক্রিয় রশ্মি ক্ষরণ করতে পারলেও ব্যাটারির এনোড ক্যাথোড, বাইরের কেস অন্যন্য উপাদান ততদিন হয়ত টিকবেনা। যাই হোক বাইরের উপাদান যত বেশি টিকবে তত বেশিদিন চলবে। সারাজীবন কোনদিন চার্জ বিয়ে ভাবা লাগবেনা।
অনেকেই মনে করেন এটি নতুন আবিষ্কার। কিন্তু মোটেও তা নয়, এই প্রযুক্তির গবেষণা ও সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা ১৯৮০ সালের দিকে প্রথম ভাবেন। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত আলোচনায় আসেনি কারণ খুব অল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হত। আর সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার হল এতে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয়তা মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। যারা তেজস্ক্রিয় সম্পর্কে জানেন তারা সহজেই বুঝতে পারবেন।
জাপানে পরমাণু বোমার তেজস্ক্রিয়তার কথাতো সবাই জানেন।
এই তেজস্ক্রিয়তা থেকে রক্ষার কৌশল আবিষ্কার করতে পারেননি তাই এটি ব্যবহার অনুপযোগী ছিল। বর্তমান কিছুদিন আগের যে ঘোষণার ফলে আলোচিত হচ্ছে সেখানে মূলত বিদ্যুত বাড়ানো এবং তেজস্ক্রিয়তা বাইরে আসতে পারবেনা এমন উপাদান ও ডিজাইন করতে পেরেছেন। যদিও সংশয় আছেই। তাই এত তাড়াতাড়ি এটি পাওয়ার আশা না করাই ভালো।