in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
তীহ্ প্রান্তরে ৪০ বছরের বন্দীত্ব বরণ সম্পর্কে লিখ?

2 Answers

0 votes
by
 
Best answer
মূসা (আঃ)-এর প্রতি অবাধ্যতা ও জিহাদ থেকে বিমুখ হওয়ার শাস্তি স্বরূপ বনু ইস্রাঈলগণকে মিসর ও শাম-এর মধ্যবর্তী একটি উন্মুক্ত প্রান্তরে দীর্ঘ ৪০ বছরের জন্য বন্দী করা হয়। তাদের অবাধ্যতায় বিরক্ত ও হতাশ হয়ে নবী মূসা (আঃ) আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেন, قَالَ رَبِّ إِنِّي لا أَمْلِكُ إِلاَّ نَفْسِي وَأَخِيْ فَافْرُقْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْقَوْمِ الْفَاسِقِيْنَ- (المائدة ২৫)- ‘হে আমার পালনকর্তা! আমি কোন ক্ষমতা রাখি না কেবল আমার নিজের উপর ও আমার ভাইয়ের উপর ব্যতীত। অতএব আপনি আমাদের ও পাপাচারী কওমের মধ্যে ফায়ছালা করে দিন’ (মায়েদাহ ৫/২৫)। জবাবে আল্লাহ বলেন, قَالَ فَإِنَّهَا مُحَرَّمَةٌ عَلَيْهِمْ أَرْبَعِيْنَ سَنَةً يَّتِيْهُوْنَ فِي الأَرْضِ فَلاَ تَأْسَ عَلَى الْقَوْمِ الْفَاسِقِيْنَ- (المائدة ২৬)- ‘এদেশটি (বায়তুল মুক্বাদ্দাস সহ শামদেশ) চল্লিশ বছর পর্যন্ত তাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হ’ল। এ সময় তারা ভূপৃষ্ঠে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ফিরবে। অতএব তুমি অবাধ্য কওমের জন্য দুঃখ করো না’ (মায়েদাহ ৫/২৬)। تَاهَ يَتِيْهُ تِيْهًا অর্থ গর্ব করা, পথ হারিয়ে ঘোরা ইত্যাদি। এখান থেকেই উক্ত প্রান্তরের নাম হয়েছে ‘তীহ্’ (تِيْه)। বস্ত্ততঃ এই উন্মুক্ত কারাগারে না ছিল কোন প্রাচীর, না ছিল কোন কারারক্ষী। তারা প্রতিদিন সকালে উঠে মিসর অভিমুখে রওয়ানা হ’ত। আর সারাদিন চলার পর রাতে আবার সেখানে এসেই উপস্থিত হ’ত, যেখান থেকে সকালে তারা রওয়ানা হয়েছিল। কিন্তু কোনভাবেই তারা অদৃশ্য কারা প্রাচীর ভেদ করে যেতে পারত না। এভাবে চল্লিশ বছর পর্যন্ত হতবুদ্ধি অবস্থায় দিগ্বিদিক ঘুরে এই হঠকারী অবাধ্য জাতি তাদের দুনিয়াবী শাস্তি ভোগ করতে থাকে। যেমন ইতিপূর্বে নূহ (আঃ)-এর অবাধ্য কওম দুনিয়াবী শাস্তি হিসাবে প্লাবণে ডুবে নিশ্চিহ্ন হয়েছিল। বস্ত্ততঃ চল্লিশ বছরের দীর্ঘ সময়ের মধ্যে হারূণ ও মূসা (আঃ)-এর তিন বছরের বিরতিতে মৃত্যু হয়। অতঃপর শাস্তির মেয়াদ শেষে পরবর্তী নবী ইউশা‘ বিন নূন-এর নেতৃত্বে জিহাদের মাধ্যমে তারা বায়তুল মুক্কাদ্দাস জয়ে সমর্থ হয় এবং সেখানে প্রবেশ করে। বর্ণিত হয়েছে যে, ১২ জন নেতার মধ্যে ১০ জন অবাধ্য ও ভীরু নেতা এরি মধ্যে মারা যায় এবং মূসার অনুগত ইউশা‘ ও কালেব দুই নেতাই কেবল বেঁচে থাকেন, যাদের হাতে বায়তুল মুক্বাদ্দাস বিজিত হয় (কুরতুবী, ইবনু কাছীর, তাফসীর মায়েদাহ ২৬)।
0 votes
by
তীহ্ প্রান্তরে ৪০ বছরের বন্দীত্ব বরণ করার ঘটনা মূলত বাইতুল মাকদিসের অধিবাসীদের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা ইসলামের পূর্ববর্তী ধর্মসমূহের ইতিহাসে উল্লেখিত হয়েছে। এই ঘটনাটি মূলত হজরত মূসা (আ.) এর সময় ঘটে।

ঘটনার পটভূমি:

ইসরাইলীদের মুক্তি: আল্লাহ তাআলা হজরত মূসা (আ.) এর মাধ্যমে ইসরাইলীদের ফিরআউন (ফারাও) এর নৃশংস শাসনের থেকে মুক্তি দেন এবং তাদেরকে ফিলিস্তিনে প্রবেশের নির্দেশ দেন।

বিরোধিতা: যখন ইসরাইলীরা মূসা (আ.) এর নেতৃত্বে কুড়ে আসলো এবং প্রতিশ্রুত ভূমিতে প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন তারা সেখানে বসবাসকারী জাতির শক্তি এবং প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়। তাদের মধ্যে কিছু লোক ভয় ও সংশয়ের কারণে আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে অস্বীকার করে।

৪০ বছরের বন্দীত্ব: এই পরিস্থিতিতে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ৪০ বছরের জন্য তীহ্ প্রান্তরে বন্দী করে দেন, যাতে তারা নিজেদের দুর্বলতা ও অনুগত্যের অভাবের জন্য শিক্ষা লাভ করতে পারে। এই সময়কাল ছিল তাদের জন্য পরীক্ষার এবং নিজেদের ঈমান ও আনুগত্য শক্তিশালী করার সুযোগ।

শিক্ষা ও শিক্ষা

ঈমান ও আনুগত্য: এই ৪০ বছরের বন্দীত্বের মাধ্যমে আল্লাহ ইসরাইলীদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে এবং ঈমান ও আনুগত্যের মূল্যের শিক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়। এটি তাদের জন্য একটি প্রক্রিয়া ছিল, যাতে তারা নিজেদের ভেতর পরিবর্তন এনে নতুনভাবে আল্লাহর নির্দেশনার প্রতি আনুগত্যের জন্য প্রস্তুত হয়।

নবীর নেতৃত্ব: এই বন্দীত্বের সময় ইসরাইলীরা নবী হজরত মূসা (আ.) এর নেতৃত্বে আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখতে শিখে এবং কৃতকর্মের জন্য তাদের দায়িত্ব বুঝতে পারে।

পরবর্তী ঘটনা:

৪০ বছরের বন্দীত্বের পর, ইসরাইলীরা আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী প্রতিশ্রুত ভূমিতে প্রবেশ করতে সক্ষম হয় এবং তারা নবী যোশুর (আ.) নেতৃত্বে সেখানে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।

এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি পাঠ, যা বিশ্বাসীদেরকে শিক্ষা দেয় যে, আল্লাহর আদেশের প্রতি আনুগত্য এবং ইমানের শক্তি থাকা কতটা জরুরি।

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...