in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
হিজরতকালের কিছু ঘটনা সম্পর্কে লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
আবুবকর (রাঃ)-এর তাওরিয়া অবলম্বন(إتخاذ التورية لأبى بكر) : যাত্রাবস্থায় আবুবকর (রাঃ) সর্বদা সওয়ারীতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পিছনে বসতেন। কেননা আবুবকরের মধ্যে বার্ধক্যের নিদর্শন প্রকাশ পেয়েছিল। কিন্তু রাসূল (সাঃ)-এর চেহারা-ছূরতে তখনো চাকচিক্য বজায় ছিল। তাই রাস্তায় লোকেরা কিছু জিজ্ঞেস করলে মুরববী ভেবে আবুবকরকেই করতো। সামনের লোকটির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলতেন,هَذَا الرَّجُلُ يَهْدِينِى السَّبِيلَ ‘এ ব্যক্তি আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন’ (বুখারী হা/৩৯১১)। এর দ্বারা তিনি হেদায়াতের পথ বুঝাতেন। কিন্তু লোকেরা ভাবত রাস্তা দেখানো কোন লোক হবে। এর মাধ্যমে তিনি রাসূল (সাঃ)-এর পরিচয় গোপন করতেন। আরবী অলংকার শাস্ত্রে এই দ্ব্যর্থবোধক বক্তব্যকে ‘তাওরিয়া’ (التوْرِيَة) বলা হয়। যাতে একদিকে সত্য বলা হয়। অন্যদিকে শ্রোতাকেও বুঝানো যায়। (২) উম্মে মা‘বাদের তাঁবুতে(فى خيمة أم معبد) : খোযা‘আহ গোত্রের খ্যাতনাম্নী অতিথিপরায়ণ মহিলা উম্মে মা‘বাদের তাঁবুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, পানাহারের কিছু আছে কি? ঐ মহিলার অভ্যাস ছিল তাঁবুর বাইরে বসে থাকতেন মেহমানের অপেক্ষায়। মেহমান পেলে তাকে কিছু না খাইয়ে ছাড়তেন না। কিন্তু এইদিন এমন হয়েছিল যে, বাড়ীতে পানাহারের মত কিছুই ছিল না। ঐ সময়টা ছিল ব্যাপক দুর্ভিক্ষের সময়। বকরীগুলো সব মাঠে নিয়ে গেছেন স্বামী আবু মা‘বাদ। একটা কৃশ দুর্বল বকরী যে মাঠে যাওয়ার মত শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল, সেটা তাঁবুর এক কোণে বাঁধা ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সেটাকে দোহন করার অনুমতি চাইলেন। উম্মে মা‘বাদ বললেন, ওর পালানে কিছু থাকলে তো আমিই আপনাদের দোহন করে দিতাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বকরীটির বাঁটে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে হাত রাখলেন ও বরকতের দো‘আ করলেন। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর ইচ্ছায় বকরীটির পালান দুধে পূর্ণ হয়ে গেল। তারপর তিনি দোহন করতে থাকলেন। তাতে দ্রুত পাত্র পূর্ণ হয়ে গেল। প্রথমে বাড়ীওয়ালী উম্মে মা‘বাদকে পান করালেন। তারপর সাথীদের এবং সবশেষে তিনি নিজে পান করলেন। এরপরে এক পাত্র পূর্ণ করে উম্মে মা‘বাদের কাছে রেখে তাঁরা পুনরায় যাত্রা করলেন। অল্পক্ষণ পরেই আবু মা‘বাদ বাড়ীতে ফিরে সব ঘটনা শুনে অবাক বিস্ময়ে বলে উঠলেন- وَاللهِ هَذَا صَاحِبُ قُرَيْشٍ ... لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ أَصْحَبَهُ وَلَأَفْعَلَنَّ إِنْ وَجَدْتُ إِلَى ذَلِكَ سَبِيْلاً ‘আল্লাহর কসম! ইনিই কুরায়েশদের সেই মহান ব্যক্তি হবেন। যার সম্পর্কে লোকেরা নানা কথা বলে থাকে। ... আমার দৃঢ় ইচ্ছা আমি তাঁর সাহচর্য লাভ করি এবং সুযোগ পেলে আমি তা অবশ্যই করব’। আসমা বিনতে আবু বকর বলেন, আমরা জানতাম না রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কোন পথে ইয়াছরিব গমন করেছেন। কিন্তু দেখা গেল যে, হঠাৎ মক্কার নিম্নভূমি থেকে জনৈক অদৃশ্য ব্যক্তি একটি কবিতা পাঠ করতে করতে এল এবং মানুষ তার পিছে পিছে চলছিল। তারা সবাই তার কবিতা শুনছিল। কিন্তু তাকে কেউ দেখতে পাচ্ছিল না। এভাবে কবিতা বলতে বলতে মক্কার উচ্চভূমি দিয়ে আওয়াযটি বেরিয়ে চলে গেল। আর বারবার শোনা যাচ্ছিল لاَ تَحْزَنْ إِنَّ اللهَ مَعَنَا ‘চিন্তিত হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন’। সেই সাথে পঠিত পাঁচ লাইন কবিতা শুনে আমরা বুঝেছিলাম যে, তিনি উম্মে মা‘বাদের তাঁবুতে অবতরণ করে ঐ পথ ধরে ইয়াছরিব গিয়েছেন। উক্ত বার্তায় কয়েক লাইন কবিতার প্রথম দু’টি লাইন ছিল নিম্নরূপ।- جَزَى اللهُ رَبُّ الْعَرْشِ خَيْرَ جَزَائِهِ + رَفِيقَيْنِ حَلاَّ خَيْمَتَيْ أُمِّ مَعْبَدٍ هُمَا نَزَلاَ بِالْبِرِّ وَارْتَحَلاَ بِه + وَأَفْلَحَ مَنْ أَمْسَى رَفِيقَ مُحَمَّدِ ‘আরশের মালিক আল্লাহ তার সর্বোত্তম বদলা দান করেছেন তাঁর দুই বন্ধুকে, যারা উম্মে মা‘বাদের দুই তাঁবুতে অবতরণ করেছেন’। ‘তারা কল্যাণের সাথে অবতরণ করেছেন এবং কল্যাণের সাথে গমন করেছেন। তিনি সফলকাম হয়েছেন যিনি মুহাম্মাদের বন্ধু হয়েছেন’।[1] মূলতঃ আবুবকর পরিবারকে দুশ্চিন্তামুক্ত করার জন্য এটি ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে এলাহী বেতার বার্তা স্বরূপ। উম্মে মা‘বাদের তাঁবুতে অবতরণের ঘটনাটি ছিল সফরের দ্বিতীয় দিনের (আর-রাহীক্ব ১৭০ পৃঃ)। (৩) সুরাক্বা বিন মালেকের পশ্চাদ্ধাবন (سراقة في أثر الرسول صـ) : বনু মুদলিজ গোত্রের নেতা সুরাক্বা বিন মালেক বিন জু‘শুম আল-মুদলেজী জনৈক ব্যক্তির কাছে মুহাম্মাদ গমনের সংবাদ শুনে পুরস্কারের লোভে দ্রুতগামী ঘোড়া ও তীর-ধনুক নিয়ে রাসূল (সাঃ)-এর পিছে

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...