মুনাফিকদের নেতা আব্দুল্লাহ বিন উবাই ইসলামের প্রাথমিক যুগে একটি নেতিবাচক এবং ষড়যন্ত্রমূলক ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি বাহ্যিকভাবে মুসলিম হিসেবে পরিচিত হলেও, তাঁর অন্তরে ইসলাম এবং মুসলমানদের প্রতি শত্রুতা ছিল। তিনি বিভিন্ন সময়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। তাঁর ভূমিকার কয়েকটি প্রধান উদাহরণ হলো:
1. **উহুদের যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা**: উহুদের যুদ্ধে আব্দুল্লাহ বিন উবাই এবং তাঁর সঙ্গীরা (প্রায় ৩০০ জন) মুসলিম বাহিনীর সাথে প্রথমে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য রওনা দেয়। কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে পৌঁছানোর আগেই আব্দুল্লাহ বিন উবাই এবং তার অনুসারীরা মুসলিম বাহিনীকে পরিত্যাগ করে ফিরে আসে, ফলে মুসলিম বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ে।
2. **বনি মুস্তালিক অভিযানে ফিতনা সৃষ্টি**: বনি মুস্তালিক অভিযানের সময় তিনি মুসলিমদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। আব্দুল্লাহ বিন উবাই মদিনার আনসার এবং মক্কার মুহাজিরদের মধ্যে সংঘর্ষ লাগানোর চেষ্টা করেন এবং উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
3. **ইফক (মিথ্যা অপবাদ) প্রচার**: আব্দুল্লাহ বিন উবাই হযরত আয়েশা (রাযি.)-এর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অপবাদ প্রচারে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি আয়েশা (রাযি.)-এর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। এই ঘটনা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর দুঃখ ও সংকট সৃষ্টি করেছিল, যা পরে ওহীর মাধ্যমে সমাধান হয়েছিল।
4. **খন্দক যুদ্ধের সময় দুর্বলতা দেখানো**: খন্দক যুদ্ধের সময়ও আব্দুল্লাহ বিন উবাই এবং তার মুনাফিক সঙ্গীরা মুসলিমদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করেন। তারা মুসলিমদের বিজয়ের প্রতি অবিশ্বাস প্রকাশ করেন এবং তাদের মধ্যে হতাশা ছড়ানোর চেষ্টা করেন।
এভাবে আব্দুল্লাহ বিন উবাই বিভিন্ন সময়ে ইসলাম এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং দুর্বলতা প্রদর্শন করে মুনাফিকদের নেতা হিসেবে কুখ্যাত হন।