in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
শিক্ষাজীবন: স্কুল থেকে পাশ করার পর ম্যান্ডেলা ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অফ আর্টস কোর্সে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষের শেষে ম্যান্ডেলা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে ছাত্র সংসদের ডাকা

1 Answer

0 votes
by
শিক্ষাজীবন: স্কুল থেকে পাশ করার পর ম্যান্ডেলা ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অফ আর্টস কোর্সে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষের শেষে ম্যান্ডেলা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে ছাত্র সংসদের ডাকা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তাই কর্তৃপক্ষ তাকে শাস্তি হিসেবে ফোর্ট হেয়ার থেকে বহিষ্কার করেন। পরবর্তীকালে জোহানেসবার্গের আইনী প্রতিষ্ঠান উইটকিন সিডেলস্কি অ্যান্ড এডেলম্যানে কেরানি হিসেবে যোগ দেন। এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময় তিনি ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ আফ্রিকার দূরশিক্ষণ কার্যক্রমের অধীনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ইউনিভার্সিটি অফ উইটওয়াটার স্ট্যান্ড থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শুরু করেন। এসময়ে তিনি জোহানেসবার্গের উত্তর দিকের শহর আলেক্সান্ডিয়াতে বাস করতেন। রাজনৈতিক জীবন: নেলসন ম্যান্ডেলা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ই ১৯৪৪ সালে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে (এএনসি) যোগ দিয়ে যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু সিসুলু, অলিভার টাম্বার মতো তরুণ, বুদ্ধিদীপ্ত ও নিবেদিতপ্রাণ একনিষ্ঠ কর্মীদের একত্র করে এএনসিকে পুরোপুরি আন্দোলনমুখী দলে পরিণত করেন। ১৯৪৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকান নির্বাচনে বর্ণবাদে বিশ্বাসী ও বিভিন্ন জাতিকে আলাদা করার পক্ষপাতি আফ্রিকানদের দল ন্যাশনাল পার্টি জয়লাভ করে। ন্যাশনাল পার্টির ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপটে ম্যান্ডেলা সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। রাজনৈতিক জীবনের প্রথমভাগে নেলসন ম্যান্ডেলা মহাত্মা গান্ধীর দর্শন দ্বারা প্রভাবিত হন। তিনি প্রথম থেকেই অহিংস আন্দোলনের পক্ষপাতী ছিলেন। ১৯৫২ সালে তিনি আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৫ সালে জনগণের সম্মেলনেও তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন: ১৯৫৫ সালে নেলসন ম্যান্ডেলা জনগণের সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের মূল ভিত্তি হিসেবে ‘স্বাধীনতার সনদ’ বা ‘মুক্তি সনদ’ প্রনয়ণ করেন। ১৯৫২ সালের অসহযোগ আন্দোলনের কারণে ম্যান্ডেলাকে কমিউনিস্ট দমন আইনে অভিযুক্ত করা হয়। তার সকল প্রকার সভা-সমাবেশ ও ছয় মাস পর্যন্ত জোহানেসবার্গের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ম্যান্ডেলা এএনসির নতুন সাংগঠনিক পরিকল্পনা তৈরি করেন এবং কৃষ্ণাঙ্গ পরিচালিত প্রথম আইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ সরকার ১৯৫৬ সালের ৫ ডিসেম্বর ম্যান্ডেলাসহ ১৫৬ জন বর্ণবাদবিরোধী কর্মীকে দেশদ্রোহিতার মামলায় গ্রেফতার করে। সুদীর্ঘ ৫ বছর (১৯৫৬-৬১) ধরে মামলা চললে পরে সব আসামী নির্দোষ প্রমাণিত হয় এবং ১৯৬১ সালে সবাইকে মুক্তি দেয়া হয়। ঐ বছর ম্যান্ডেলা এএনসির সশস্ত্র অঙ্গসংগঠন ‘উমখান্তো উই সিমওয়ে’ অর্থাৎ ‘দেশের বল্লম’ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বর্ণবাদবিরোধী সরকার ও তার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতী ও চোরাগোপ্তা হামলার পরিকল্পনা ও সমন্বয় করেন। এতে বর্ণবাদী সরকার পিছু না হটলে প্রয়োজনবোধে গেরিলা যুদ্ধে যাবার জন্যও পরিকল্পনা করেন। সংগ্রামী জীবন: দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলন সফল হবে না বলে ম্যান্ডেলা সশস্ত্র আন্দোলনের পথ বেছে নিয়ে ছিলেন। বর্ণবাদভিত্তিক আন্দোলনের কারণে ১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট ম্যান্ডেলাকে গ্রেফতার করে জোহানেসবার্গের দূর্গে আটকে রাখা হয়। ১৯৬১ সালে শ্রমিক ধর্মঘটে নেতৃত্বদান এবং বেআইনীভাবে দেশের বাইরে যাবার অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। ১৯৬২ সালের ২৫ অক্টোবর এই দুই অভিযোগে তাকে ৫ বছরের কারাদ- দেয়া হয়। এর দুই বছর পর ১৯৬৪ সালের ১১ জুন ম্যান্ডেলার বিরুদ্ধে এএনসির সশস্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্বদান এবং অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে রিভোনিয়া ট্রায়ালে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। পরে পাঠানো হয় কুখ্যাত রোবেন দ্বীপের কারাগারে। ম্যান্ডেলার (সংকেত: ভূমিকা; নেলসন ম্যান্ডেলার জন্ম ও শৈশবকাল; ম্যান্ডেলার শিক্ষাজীবন; রাজনৈতিক জীবন; বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন; সংগ্রামী জীবন; কারাজীবন; কারাগার থেকে মুক্তি; দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি; ম্যান্ডেলার অনন্য রূপ; পুরস্কার ও সম্মান; ম্যান্ডেলার অন্তিমকাল; উপসংহার।) ভূমিকা: বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ও মহান রাষ্ট্রনায়কদের একজন হলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার জাতির পিতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট। বিশ্ববাসীর কাছে তিনি এক মহান অবিসংবাদিত নেতা ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রবাদ পুরুষ। তিনি বর্ণবাদ নির্মূল তথা জাতীয় ঐক্যের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। তার অক্লান্ত সংগ্রামের ফলেই অবহেলিত ও নিপীড়িত মানুষ স্বাধীনতা, সাম্য ও মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। নেলসন ম্যান্ডেলার জন্ম ও শৈশবকাল: নেলসন ম্যান্ডেলা ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার উমতাতু প্রদেশের এমভাজো গ্রামে টেম্বু রাজবংশে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হেনরি ম্যান্ডেলা, মায়ের নাম নোসেকেনি ফ্যানি। তার ডাকনাম ‘রোরিহ্লাহ্লা’ যার অর্থ ‘গাছের ডাল ভাঙে যে’ অর্থাৎ সমস্যা সৃষ্টিকারী, উপদ্রবকারী বা দুষ্টু ছেলে। দক্ষিণ আফ্রিকানদের কাছে তিনি মাদিবা নামে বেশি পরিচিত। তবে পূর্বপুরুষদের নাম অনুযায়ী তার পদবি ম্যান্ডেলা। ম্যান্ডেলার দাদা ছিলেন একজন রাজা এবং বাবা ছিলেন টেম্বু উপজাতির গোত্রপ্রধান। জন্মের ৮ বছর বয়সেই তিনি বাবাকে হারান। পরে তার গোত্র প্রধানের পরিচর্যায় বড় হন। তার শৈশবকাল কাটে নানার বাড়িতে। তিনিই তার পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে পড়ার সময় তার শিক্ষিকা মদিঙ্গানে তার ইংরেজি নাম রাখেন “নেলসন”। ম্যান্ডেলার কারাb> ম্যান্ডেলাকে শত শত পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। গত চার দশকে ম্যান্ডেলা ২৫০টিরও অধিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি ১৯৮৮ সালে শাখারভ পুরস্কারটি যৌথভাবে অর্জন করেন। ১৯৯৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯০ সালে ভারত সরকার তাকে ভারতরত্ম উপাধিতে ভূষিত করে। তিনি কানাডার সম্মানজনক নাগরিকত্ব, ব্রিটিশ লেবার পার্টি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের সম্মানজনক সদস্য হিসেবে সম্মান লাভ করেন। এছাড়া একটি পারমানবিক কনার নাম রাখা হয়েছে ম্যান্ডেলা পার্টিকল। একটি প্রাগৈতিহাসিক কাঠঠোকরা ও একটি অর্কিডের নামকরণও হয়েছে তার নামে। জাতিসংঘ ২০০১ সালে তার জন্ম দিন ১৮ জুলাইকে প্রতিবছর ম্যান্ডেলা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। বিদায় বেলা/b> বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার উৎস নেলসন ম্যান্ডেলা। তাঁর অহিংস রাজনীতির আদর্শ ও বর্ণবাদীবিরোধী সংগ্রাম তাকে অনন্তকাল ধরে পৃথিবীবাসীর হৃদয়ে চিরঞ্জীব, চিরস্মরণীয় করে রাখবে। একটি কল্যাণকর ও ন্যায়নিষ্ঠ জাতি গড়ার ক্ষেত্রে তার মূল্যবোধ, ত্যাগ ও সংগ্রাম উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। জীবন: ম্য/ম্যান্ডেলার অন্তিমকাল/মৃত্যু: রোবেন দ্বীপের নোংরা কারা প্রকোষ্টে থাকার সময় ম্যান্ডেলার শরীরে বাসা বাধে মরণব্যাধি যক্ষ্মা। শেষ বয়সে তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেয়। দীর্ঘ তিন মাস প্রিটোরিয়ার মেডিক্লিনিক হাসপাতালে থাকার পর জোহানেসবার্গের বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। ১০ দিন ধরে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ায় নানা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার পর ১৫ ডিসেম্বর ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের নিজ গ্রাম কুনুতে পারিবারিক সমাধিতে তাকে সমাহিত করা হয়। উপসংহার:

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...