in ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিষয় by
সাফা পাহাড়ের দাওয়াত সম্পর্কে কিছু লিখ?

1 Answer

0 votes
by
 
Best answer
নিকটাত্মীয়দের প্রতি প্রকাশ্যে দাওয়াত দেওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কুরায়েশ বংশের সকল গোত্রকে একত্রিত করে তাদের সামনে দাওয়াত দেবার মনস্থ করলেন। তৎকালীন সময়ে নিয়ম ছিল যে, বিপদসূচক কোন খবর থাকলে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে চিৎকার দিয়ে আহবান করতে হত। আসন্ন কোন বিপদের আশংকা করে তখন সবাই সেখানে ছুটে আসত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সেমতে একদিন সাফা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে চিৎকার দিয়ে ডাক দিলেন,يَا صَبَاحَاه (প্রত্যুষে সবাই সমবেত হও!)। কুরায়েশ বংশের সকল গোত্রের লোক দ্রুত সেখানে জমা হয়ে গেল। অতঃপর তিনি বললেন, হে কুরায়েশগণ! আমি যদি বলি, এই পাহাড়ের অপর পার্শ্বে একদল শক্তিশালী শত্রুসৈন্য তোমাদের উপরে হামলার জন্য অপেক্ষা করছে, তাহলে কি তোমরা সে কথা বিশ্বাস করবে? সকলে সমস্বরে বলে উঠল, অবশ্যই করব। কেননা مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ إِلاَّ صِدْقًا ‘আমরা এযাবৎ তোমার কাছ থেকে সত্য ব্যতীত কিছুই পাইনি’। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, فَإِنِّىْ نَذِيْرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَىْ عَذَابٍ شَدِيْدٍ ‘আমি ক্বিয়ামতের কঠিন আযাবের প্রাক্কালে তোমাদের নিকটে সতর্ককারী রূপে আগমন করেছি’।[বুখারী হা/৪৭৭০; মুসলিম হা/২০৮; মিশকাত হা/৫৩৭২, ৫৮৪৬] অতঃপর তিনি আবেগময় কণ্ঠে এক একটি গোত্রের নাম ধরে ধরে ডেকে বলতে থাকলেন,يَامَعْشَرَ قُرَيْشٍ! أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ ‘হে কুরায়েশগণ! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! হে বনু কা‘ব বিন লুওয়াই! হে বনু ‘আব্দে মানাফ!... হে বনু ‘আব্দে শাম্স!.. হে বনু হাশেম!... হে বনু আব্দিল মুত্ত্বালিব! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। অতঃপর ব্যক্তির নাম ধরে ধরে বলেন, হে (চাচা) আববাস বিন আব্দুল মুত্ত্বালিব! তুমি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! হে (ফুফু) ছাফিইয়াহ! তুমি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। অবশেষেيَا فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ! أَنْقِذِىْ نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ، سَلِيْنِىْ مَا شِئْتِ مِنْ مَالِىْ، وَاللهِ لاَ أُغْنِيْ عَنْكِ مِنَ اللهِ شَيْئًا ‘হে মুহাম্মাদের কন্যা ফাতেমা! তুমি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! তুমি আমার মাল-সম্পদ থেকে যা খুশী নাও! কিন্তু আল্লাহর কসম! আমি তোমাকে আল্লাহর পাকড়াও হতে রক্ষা করতে পারব না’। এই মর্মস্পর্শী আবেদন গর্বোদ্ধত চাচা আবু লাহাবের অন্তরে দাগ কাটেনি। তিনি মুখের উপর বলে দিলেন-تَبًّا لَكَ سَائِرَ الْيَوْمِ، أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا؟ ‘সকল দিনে তোমার উপরে ধ্বংস আপতিত হৌক! এজন্য তুমি আমাদের জমা করেছ?’ অতঃপর সূরা লাহাব নাযিল হয়تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ ‘ধ্বংস হৌক আবু লাহাবের দু’হাত এবং ধ্বংস হৌক সে নিজে’।[বুখারী হা/২৭৫৩, মুসলিম হা/২০৮; মিশকাত হা/৫৩৭২-৭৩] এভাবে নিজ সম্প্রদায়কে এবং বাজারে-ঘাটে সর্বত্র বিশেষ করে হজ্জের মৌসুমে সকলকে উদ্দেশ্য করে তিনি প্রকাশ্যে দাওয়াত দিতে থাকেন এই মর্মে যে,قُوْلُوْا لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ تُفْلِحُوْا ‘তোমরা বল আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তাহলে তোমরা সফলকাম হবে’।[1] [1]. আহমাদ হা/১৬০৬৬, সনদ হাসান; হাকেম হা/৩৯, ৪২১৯ সনদ সহীহ। উল্লেখ্য যে, নিকটাত্মীয়দের দাওয়াত দেওয়ার আদেশ পালন করতে গিয়ে রাসূল (সাঃ) প্রথমে বনু হাশেম ও বনু আব্দুল মুত্ত্বালিবের ৪৫জন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকে বাড়িতে দাওয়াত দেন। কিন্তু আবু লাহাবের বিরোধিতার কারণে উক্ত দাওয়াত ব্যর্থ হলে পুনরায় দ্বিতীয়বার তাদেরকে দাওয়াত দেন। তখন আবু লাহাব প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন এবং আবু ত্বালেব তাঁকে আমৃত্যু সাহায্য করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন (আর-রাহীক্ব ৭৮-৭৯ পৃঃ) মর্মে বক্তব্যগুলির কোন বিশুদ্ধ ভিত্তি নেই (সীরাহ সহীহাহ ১/১৪২-৪৩)।

Related questions

উত্তর সন্ধানী! বেস্ট বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ওয়েবসাইট। প্রশ্ন করুন, উত্তর নিন, সমস্যা সমাধান করুন ।
উত্তর সন্ধানী কি?
উত্তর সন্ধানী বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর এর ওয়েবসাইট।
গোপন প্রশ্ন ও উত্তর। ডিজিটাল শিক্ষায় প্রশ্নের উত্তরের সেরা ওয়েবসাইট।
...